বক্তা: শনিবার দাড়িভিটের সভায় সীতারাম ইয়েচুরি। নিজস্ব চিত্র
দাড়িভিট কাণ্ড নিয়ে ডিওয়াইএফের সভায় বক্তব্য রাখতে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু দাড়িভিট প্রসঙ্গে কার্যত কিছুই বললেন না সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে বিজেপি-তৃণমূলকে বিঁধলেন তিনি। শনিবার দাড়িভিটের কাছে গঙ্গামেলা মাঠে ডিওয়াইএফের ওই সভায় ইয়েচুরির বক্তব্য, কেন্দ্রে বিজেপি এবং একই সঙ্গে রাজ্যে তৃণমূলকে সরাতে হবে।
নরেন্দ্র মোদী সরকারেক আক্রমণ করে ইয়েচুরি বলেন, ‘‘জনতার পকেট থেকে টাকা লুট করছে ওরা। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকেও পয়সা চাইছে। কারণ জনতাকে ওরা ললিপপ দেবে। এই ললিপপে আর জনতা ভুলবে না। বিকল্প কী আছে সেটা দেখতে হবে।’’ এ প্রসঙ্গেই এ দিন সভার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এ দিন কলকাতার ব্রিগেডের সভায় তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সেইসঙ্গে জানান, আমন্ত্রণ জানালেও তিনি সেখানে যেতেন না। কংগ্রেস-তৃণমূল জোট হলে তাঁরা কী করবেন, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘কে কার সঙ্গে জোট করছে, সে বিষয়টি এখনও ঠিক হয়নি। তার আগে এ বিষয়ে কী করে বলব?’’
সভায় ইয়েচুরি বলেন, ‘‘যেমন কুরু বংশ ধ্বংস হয়েছিল, তেমনই দেশের সর্বনাশ করার চেষ্ট করছে বিজেপি এবং আরএসএসের রাজনীতি। আমরা তা হতে দেব না। সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ চলছে। সুপ্রিম কোর্ট, সিবিআই, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতো সংস্থাকে নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে।’’ এ দিন তিনি বিকল্প ফ্রন্টের কথা বলেন। তবে কী হবে সেই ফ্রন্ট তা স্পষ্ট করে জানাতে পারেননি। ব্রিগেডের সভা নিয়ে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘যে সব নেতা বিজেপিকে হঠাতে কলকাতায় এসেছেন, তাঁদের কাছে আমার একটাই প্রশ্ন। তাঁরা কি জনগণের জন্য নীতি বদলাবেন? দেশ এখন নেতা নয়, নীতি চায়। জনগণের জন্য নীতি বদলাতে লালঝান্ডা ছাড়া কেউ পারবে না।’’ সিপিএম বাংলা ও ত্রিপুরায় যে হেরেছে সেই প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে অনেকে ভাবতেই পারেন যে লালঝান্ডারা কী করবে?’’ তাঁর দাবি, লালঝান্ডার কখনও হার হয় না। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অবশ্য অবিজেপি সরকার গড়তে আরজেডি, জেডিইউ, এনসিপি’র কথা ভাবার বিষয়ে বলেন।
এই সভা নিয়ে তৃণমূলের বিধায়ক কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘৩৪ বছর ধরে সিপিআমই সবাইকে ললিপপ দেখিয়েছে।’’ বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলার সহকারী সভাপতি সুরজিৎ সেন বলেন, ‘‘এসব না বলে সীতারামবাবু নিহতের বাড়িতে যেতে পারতেন। কিন্তু তা করেননি।’’
দাড়িভিট-কাণ্ডে দুই তরুণের মৃত্যুর প্রতিবাদ, বেকারদের কর্মসংস্থান-সহ কয়েক দফা দাবিতে সভা করে ডিওয়াইএফ। গত ২০ সেপ্টেম্বর শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়েছিল দাড়িভিট হাইস্কুল। সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্য হয় দুই কলেজ পড়ুয়া রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণের। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও তদন্ত হয়নি বলেই অভিযোগ তুলেছেন মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘দুইজন ছাত্র খুন হল। আমরা প্রথম দিন থেকেই বলেছিলাম ন্যায় বিচার চাই।’’