প্রতীকী ছবি।
‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় নিতুড়িয়ার মাদ্রাসার এক ছাত্রকে মারধরের অভিযোগের তদন্তে বিশেষ দল গড়ল পুলিশ। তবে ঘটনার পরে দু’দিন কেটে গেলেও পুলিশ শুক্রবার পর্যন্ত অভিযুক্তদের ধরতে না পারায় ক্ষুব্ধ নিগৃহীত ছাত্রের পরিজনেরা। এক দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে শুক্রবার বিকেলে তাঁরা নিতুড়িয়া থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান।
এ দিন সকালেই নিতুড়িয়া যান এসডিপিও (রঘুনাথপুর) দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায় ও কাশীপুরের সিআই সুকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা থানায় গিয়ে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ নেন। ঘটনাস্থলে যান। হামলার আগে-পরে ওই এলাকা দিয়ে কারা যাতায়াত করেছিলেন তা জানতে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের উপরে জোর দিয়েছে পুলিশ। পরে এসডিপিও বলেন, ‘‘সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে। দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের বিষয়ে আমরা আশাবাদী।’’
বুধবার বিকেলে মাদ্রাসার বছর এগারোর এক ছাত্র তার বন্ধুকে বাসে তুলে ফিরছিল। ওই কিশোরের অভিযোগ, চার যুবক তার পথ আটকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলার জন্য চাপাচাপি করে। রাজি না হওয়ায় তাকে মাটিতে ফেলে মারা হয়। বৃহস্পতিবার তার বাবা নিতুড়িয়া থানায় এমনই অভিযোগ দায়ের করেন।
খবর চাউর হতেই শুরু হয় রাজনৈতিক তর্জা। ঘটনার পিছনে বিজেপির ইন্ধন আছে বলে অভিযোগ তোলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপি পাল্টা দাবি করেছে, তাদের ভাবমূ্র্তিতে কালি ছেটাতেই তৃণমূল এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।
এ দিকে পুলিশ তদন্ত শুরু করার পরেও কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর একাংশ। শুক্রবার বিকেলের দিকে শতাধিক লোকজন থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন নিগৃহীত ছাত্রটির বাবাও। তাঁর দাবি, ‘‘বৃহস্পতিবারই পুলিশ আমাদের জানিয়েছিল, এক দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে। কিন্তু শুক্রবারও এক জনকে ধরতে পারেনি পুলিশ।’’
তবে ছেলেকে তিনি এখনই মাদ্রাসায় ফেরত পাঠাতে চাইছেন না বলে জানিয়েছেন ওই কিশোরের বাবা। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘ছেলে এখনও আতঙ্কের মধ্যেই আছে। মারধরের ফলে তার মুখে ও গলায় ব্যাথা আছে। এই অবস্থায় তাকে মাদ্রাসায় পাঠানো সম্ভব নয়।”
এ দিকে তদন্তের কাজে তাঁরা কোনও প্রকার ঢিলেমি দিচ্ছেন না বলে দাবি করেছেন জেলা পুলিশের এক কর্তা। তিনি দাবি করেন, ঘটনার কোনও প্রত্যক্ষদর্শী না পাওয়ায় এবং ছাত্রটি অভিযুক্তদের কাউকেই চিনতে না পারার ফলে তদন্তে কিছুটা সমস্যায় পড়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল দিয়ে লোকজনের ভালই যাতায়াত রয়েছে। আপাতত সেখান থেকে বেশ থেকে কিছুটা দূরে একটি ‘ম্যারেজ হল’-এর দরজার সামনে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ছবি দেখে তদন্তে সূত্র পেতে চাইছে পুলিশ। ওই সিসি ক্যামেরায় ঘটনার আগে-পরে রাস্তা দিয়ে কারা যাতায়াত করেছেন, সেই ছবি পাওয়া যাবে বলেই মনে করছে পুলিশ।