ফাইল চিত্র।
জ়েড প্লাস নিরাপত্তার ঘেরাটোপ ডিঙিয়ে হাফিজুল মোল্লা নামে এক যুবক লোহার রড নিয়ে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির ভিতরে সাত ঘণ্টা বসে রইল। কী করছিল পুলিশ? এই প্রশ্নের সদুত্তর এখনও মেলেনি। তবে পুলিশি নিরাপত্তা বলয় এড়িয়ে ওই যুবক কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকেছিল, সেই বিষয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কাছে রিপোর্ট পেশ করেছে লালবাজারের ‘সিট’ বা বিশেষ তদন্তকারী দল। মঙ্গলবার একটি মুখবন্ধ খামে সেই তদন্ত রিপোর্ট সিপি-কে দিয়েছেন তদন্তকারীরা।
জ়েড প্লাস নিরাপত্তার রন্ধ্র দিয়ে এক আগন্তুকের ঢুকে পড়ার ঘটনায় পুলিশের তরফে কোনও গাফিলতি ছিল কি না, সেই বিষয়ে লালবাজারের কর্তারা কিছু বলতে চাননি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বক্তব্য, সে-রাতে ওই বাড়িতে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ফাঁক যে ছিলই, সেখানে হাফিজুলের সাত ঘণ্টা ঘাপটি মেরে বসে থাকার ঘটনাতেই সেটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। সেই ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একাধিক পুলিশকর্তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ এ দিন অভিযোগ করেছে, দুষ্কৃতীদের সঙ্গে হাফিজুলের যোগসাজশ রয়েছে। হাফিজুল পুলিশকে জানিয়েছে, সে একাধিক বার হাসনাবাদ হয়ে বাংলাদেশে গিয়েছে। পুলিশের অভিযোগ, বেআইনি ভাবে বাংলাদেশে যাতায়াত করেছে সে। কোনও চোরাচালান চক্রের তার যোগাযোগ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন লালবাজারের তদন্তকারীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২ জুলাই গভীর রাতে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের বাসিন্দা ওই যুবক নিরাপত্তারক্ষীদের চোখ এড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়ে। পরের দিন সকালে তাকে দেখতে পান নিরাপত্তারক্ষীরা। তার সঙ্গে লোহার রড ছিল বলে পুলিশ জানায়। গ্রেফতার করা হয় হাফিজুলকে। পুলিশি হাজতে রেখে এখনও তাকে জেরা করা হচ্ছে। তার পরিবারের বক্তব্য, মানসিক ভাবে স্থিতিশীল নয় হাফিজুল। পুলিশ জানায়, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির আশেপাশে রীতিমতো ‘রেকি’ করে অর্থাৎ বার বার ঘুরেফিরে সব দেখে নিয়েছিল। তথ্য পেতে ভাব জমিয়েছিল মমতার পাড়ার লোকেদের সঙ্গে। সে মোবাইলে ছবিও তুলেছে মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথের। যদিও গ্রেফতারের পরে তার কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা মালপত্রের মধ্যে কোনও মোবাইল পাওয়া যায়নি।
পুলিশকর্তাদের মতে, নিরাপত্তার নিচু তলায় কোনও ফাঁকফোকর ছিল কি না, সিটের তদন্তকারীরা সেটাই খুঁজে বার করছেন। সে-রাতের ঘটনার পরে সিট গঠন করে লালবাজার। সেখানকার গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারদের সঙ্গে সিটে রয়েছেন এসটিএফের তদন্তকারীরাও। ঘটনার রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ডিউটিতে থাকা পুলিশকর্মীদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা বলেছেন তাঁরা।