পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ফের চর্চায় সিঙ্গুর। প্রতীকী ছবি।
সরকারি উদ্যোগে ‘অলঙ্কার হাব’ গড়ার পরিকল্পনা হয়েছে সিঙ্গুরে। কিন্তু সেই প্রকল্পের জন্য জমি মাপতে গিয়ে গ্রামবাসীদের বাধায় ফিরতে হল সরকারি আধিকারিকদের। ফলে, পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ফের চর্চায় সিঙ্গুর।
সোমবার সিঙ্গুরের নসিবপুর পঞ্চায়েতের দেশাপাড়ায় ওই প্রকল্পের জন্য সরকারি আধিকারিকেরা জমি মাপতে গেলে ওই ঘটনা ঘটে। গ্রামবাসীদের দাবি, জায়গাটি (প্রায় ১৫ কাঠা) আগে শ্মশান ছিল। তাই, সেখানে অন্য কিছু না করাই যুক্তিযুক্ত।
সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তপন মালিকের বক্তব্য, ‘‘ওটা সরকারি খাসজমি। এক দশকেরও বেশি সময় শ্মশান হিসেবে ব্যবহার করা হয় না। নসিবপুর পঞ্চায়েতের অনুমতি সাপেক্ষে জেলা শিল্প দফতর এবং ব্লক ভূমি দফতরের আধিকারিকরা জমি মাপতে গিয়েছিলেন। অন্য মত থাকতেই পারে। ওঁদের আলোচনায় ডাকব। অলঙ্কার হাব হলে কর্মসংস্থান হবে।’’ সিঙ্গুরের বিধায়ক বেচারাম মান্না জানান, বিষয়টি তাঁর কিছু জানা নেই। কী ঘটেছে, খোঁজ নেবেন।
কৃষিজমিতে মোটরগাড়ি কারখানা তৈরির প্রতিবাদকে সামনে রেখে একসময়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল সিঙ্গুর। কারখানা হয়নি। রাজ্যের রাজনৈতিক পালাবদলে সিঙ্গুর আন্দোলনের বড় ভূমিকা ছিল বলে অনেকেই মনে করেন। সেই সিঙ্গুরেই এ বার সরকারি উদ্যোগে প্রকল্প তৈরির কাজে এসে গ্রামের মানুষের বাধায় আধিকারিদের ফিরতে হওয়ায় চর্চা শুরু হয়েছে। এর আগে সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো-হাব প্রকল্প তৈরির ক্ষেত্রে অবশ্য কোনও বাধা পেতে হয়নি।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈদ্যবাটী-তারকেশ্বর রোডের ধারে নসিবপুর পঞ্চায়েতের দেশাপাড়ায় পড়ে থাকা জমিতে সরকারি কোনও প্রকল্প তৈরির ভাবনাচিন্তা শুরু হয় কয়েক মাস আগে। পঞ্চায়েতের তরফে সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্লক প্রশাসনকে জানানো হয়। জেলা শিল্প দফতরের তরফে ‘অলঙ্কার হাব’ তৈরির কথা ভাবা হয়।
ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জমি মাপতে গিয়ে গ্রামবাসীদের বাধার খবর পেয়ে ব্লক প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকরা সেখানে যান। সব পক্ষকে বুঝিয়েই ওখানে প্রকল্পের কাজ হবে।’’
বাপন কোলে নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘ওটা শ্মশান বলে চিহ্নিত সরকারি খাসজমি। শুনেছি, কোনও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে সেটি দেওয়া হচ্ছে। তাই আমরা আপত্তি জানাই। ওখানে একটা নিকাশি নালা রয়েছে। সেটি বন্ধ হয়ে গেলে গ্রামের মানুষ সমস্যা পড়বেন।’’ সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দাবি, ‘‘কোনও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে ওই জমি দেওয়া হবে না। সরকারি প্রকল্পই হবে।’’