প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও বর্তমান শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজা। ফাইল চিত্র।
এসএসসি দুর্নীতিতে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপরেই তাঁকে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দায়িত্ব দিয়েছেন শশী পাঁজাকে। সূত্রের খবর, তারপর থেকেই শিল্প দফতর বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছে বিশ্ববঙ্গ সম্মেলনে আগত বিনিয়োগগুলি সঠিক ভাবে বাস্তবায়িত করতে হবে। সেক্ষেত্রে জমির সমস্যা মেটাতে শিল্পতালুকে পড়ে থাকা জমিগুলিকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য শিল্প দফতর।
তৃতীয় বার ক্ষমতায় এসে বাংলাকে শিল্পে এক নম্বর করার সংকল্প নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এ বার একাধিক পদক্ষেপ করছেননতুন মন্ত্রী শশী। দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার এক দিন পরেই তিনি হাওড়ায় ছুটে গিয়েছিলেন শিল্পতালুক পরিদর্শন করতে। তাঁর লক্ষ্য, সব জেলাতেই সমান গুরুত্ব দিয়ে শিল্পস্থাপন। যে কারণেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বড় শিল্পতালুকগুলির হাল-হকিকত জানতে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। তাঁর নির্দেশেই শিল্পতালুক ধরে ধরে তালিকা তৈরি করছে শিল্প দফতর। পাশাপাশি জানতে চাওয়া হয়েছে কোন সংস্থার নামে ওই জমিগুলি নেওয়া হয়েছিল। এবং কত দিন ধরে তা পড়ে রয়েছে। সেই সব সংস্থাকে বলা হবে, তারা যেন ওই জমিকে দ্রুত কাজে লাগিয়ে বিনিয়োগ নিশ্চিত করে। নতুবা রাজ্য সরকারকে সেই জমি দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগী হন।
শিল্প দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বিভিন্ন শিল্পতালুকে বণ্টন হওয়া অব্যবহৃত জমির তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে আধিকারিকদের। আমরা কারও থেকে তো জমি ফেরত নিতে পারি না। আমাদের উদ্দেশ্য হল, সব রকম সাহায্য দিয়ে পড়ে থাকা জমিতে দ্রুত বিনিয়োগ নিশ্চিত করা।’’ প্রসঙ্গত, ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ১৮টি বৃহৎ শিল্পতালুক গড়েছে। এই শিল্পতালুকগুলির পরিকাঠামো গঠন করেছে সংশ্লিষ্ট নিগম। এর ফলে এক দিকে যেমন সেই এলাকার অর্থনৈতিক মান উন্নত হবে, ঠিক তেমনই রাজ্যজুড়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ নতুন দিশা পাবে। যাদের জমি বেশি দিন ধরে পড়ে রয়েছে, তাদের সঙ্গে আগে কথা বলা হবে। সকলকেই অব্যবহৃত জমিতে দ্রুত শিল্প সংস্থা গড়ে তোলার অনুরোধ করা হবে। প্রয়োজনে তাঁদের সঙ্গে কথাও বলতে পারেন শিল্পমন্ত্রী।
পার্থর গ্রেফতারির পর শিল্পক্ষেত্রে রাজ্যের ভাবমূর্তি যে ভাবে ধাক্কা খেয়েছে, সেই ভাবমূর্তি উদ্ধারেও এই পদক্ষেপ কার্যকরী হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই পার্থর হাতে থাকা দফতর হাতবদল হতেই যে তাতে গতি এসেছে, সেই বার্তা যাতে রাজ্যের শিল্পমহলের কাছে পৌঁছয়, সেই বিষয়ে আবহ তৈরি করাও শিল্প দফতরের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।