পশ্চিমবঙ্গে জাতপাত এবং ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি ঠেকানোর জন্য নজিরবিহীন ভাবে বামপন্থীদের কৃতিত্ব দিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। পাশাপাশি, এ রাজ্যে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি আমদানি করার জন্য তৃণমূলকে দুষলেন তিনি।
ফিকি এফএলও আয়োজিত ‘পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতির পরিবর্তনশীল মুখ— বাম থেকে দক্ষিণ’ শীর্ষক আলোচনাসভায় শনিবার সিদ্ধার্থনাথ বলেন, ‘‘এ রাজ্যে গ্রামে হিন্দু-মুসলমান পাশাপাশি বাস করেন। অন্য রাজ্যের মতো ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি নেই। উত্তরপ্রদেশ-বিহারের মতো জাতপাতের সমস্যাও নেই। এর জন্য বাম রাজনীতিকে কৃতিত্ব দিতেই হবে।’’ সিদ্ধার্থনাথের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল এখানে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি আমদানি করছে।’’ তাঁর দাবি, বিজেপি সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের ফায়দা নিয়ে ভোটে জেতার চেষ্টা করবে না। গঠনমূলক রাজনীতি করবে।
রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, সংখ্যালঘু ভোটের স্বার্থেই সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের পথ পরিহােরর কথা বলেছেন সিদ্ধার্থনাথ। বিজেপি সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতির ফায়দা তুলতে চায় না, এটা বিশ্বাস করা কঠিন বলে মত সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিমের। তাঁর কথায়, ‘‘এক হাতে তালি বাজে না। এ রাজ্যে কয়েক বছরে যে হানাহানির রাজনীতি হচ্ছে, তাতে তৃণমূলের ভূমিকা বেশি। বিজেপির ভূমিকাও আছে। এখানে হানাহানির রাজনীতি করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে এখন সিদ্ধার্থনাথরা এ সব বলছেন।’’ সিদ্ধার্থনাথের তত্ত্বকে আমল না দিয়ে তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ রাজ্যে আবার মেরুকরণ কী! মানুষ সিপিএমের অপশাসন, কংগ্রেসের দুর্বল হওয়া বিজেপির জাতপাতের বিভাজন দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন। মেরুকরণ যদি হয়েই থাকে, তা হলে রাজ্যে এই মেরুকরণটাই হয়েছে। সিদ্ধার্থনাথ এ রাজ্যের ইতিহাস-ভূগোল জানেন না! তাই এ সব বলছেন!’’
রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসার জন্য তৃণমূলকে দুষে সিদ্ধার্থনাথ আরও বলেন, ‘‘হিংসার পাল্টা হিংসা আমরা করতে চাই না। আমরা এ বার (২০১৬) ভোটে জিততে পারি বা আমাদের পরের বার জেতার চেষ্টা করতে হতে পারে। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই হিংসার আশ্রয় নিয়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করব না।’’