বিধানসভার সভার থেকে সাসপেন্ড হওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র
বিধানসভা থেকে সাসপেনশনের প্রতিবাদে এ বার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার উচ্চ আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন তাঁর আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য। চলতি সপ্তাহেই সেই মামলার শুনানি হতে পারে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার একক বেঞ্চে। প্রসঙ্গত, বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনে অধিবেশন কক্ষে বিজেপি ও তৃণমূল বিধায়কদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় স্পিকার সাসপেন্ড করেন বিরোধী দলনেতা-সহ পাঁচ জন বিধায়ককে। অধিবেশনের আগেই বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী ও সুদীপ মুখোপাধ্যায় সাসপেন্ড ছিলেন। ৩১ মার্চ বিধানসভার সচিব চিঠি লিখে বিজেপির সাময়িক ভাবে বরখাস্ত সাত জন বিধায়ককে জানিয়ে দেন, সাসপেন্ড থাকার সময় বিধানসভায় তাঁদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যত দিন না সাসপেনশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে, তত দিন তাঁদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। বিজেপি পরিষদীয় দলের দাবি, অনির্দিষ্টকালের জন্য তাঁদের সাসপেন্ড করেছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তাঁরা সুবিচার পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
সাসপেন্ড করা হয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু-সহ বিজেপির সাত জন বিধায়ক এই সময়ের জন্য দৈনিক বরাদ্দ ভাতাও পাবেন না। এ ক্ষেত্রে তাদের ‘হাতিয়ার’ হতে পারে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়। ২০২১ সালের জুলাই মাসে মহারাষ্ট্র বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল ১২ জন বিজেপি বিধায়ককে। ‘অসংসদীয়’ আচরণের অভিযোগে তাঁদের এক বছরের জন্য বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করা হয়। মহারাষ্ট্র বিধানসভার স্পিকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন শাস্তিপ্রাপ্ত বিধায়করা। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের সাসপেনশন বাতিল করে দেয়। সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চে বিচারপতি এএম খান উলকর, বিচারপতির দীনেশ মহেশ্বরী ও বিচারপতি সিটি রবিকুমার ওই রায় দেন। সেই রায়কে ‘হাতিয়ার’ করেই আদালতে আবেদন করেছেন বিরোধী দলনেতা।
গত সপ্তাহে বিধানসভায় এসেও নিজের ঘরে যাননি শুভেন্দু। বিধানসভায় অম্বেডকরের মূর্তির নীচে বসেই নিজের কাজ সেরেছিলেন তিনি। আগামী শুক্রবার মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ মামলায় বিরোধী দলনেতাকে নিজের ঘরে আসতে বলেছেন স্পিকার। সেই নির্দেশের জবাবে শুভেন্দু চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছেন, কোন পথ দিয়ে তিনি স্পিকারের ঘরে আসবেন। কারণ বিধানসভার সচিবের দেওয়া চিঠিতে তাঁদের বিধানসভার ভিতরে প্রবেশ করবে নিষেধ করা হয়েছে। যদিও, বিধানসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, স্পিকার কখনও গোটা বিধানসভায় তাঁদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করেননি। ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, কেবল মাত্র অধিবেশন কক্ষ এবং কক্ষ লাগোয়া অংশে সাসপেন্ডেড বিজেপি বিধায়করা যেতে পারবেন না। তাই বিরোধী দলনেতা যে প্রশ্ন তুলে স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন, তা অপ্রয়োজনীয়।