বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের (মাঝে) সঙ্গে আলাপচারিতায় দিলীপ ঘোষ। আনন্দবাজার অনলাইনের বছরের বেস্ট অনুষ্ঠানে। —নিজস্ব চিত্র।
এক সময় একই রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলেন তাঁরা। তার পরেও খুব একটা বনিবনা যে তাঁদের ছিল না তা দু’পক্ষের কথার লড়াইয়েই পরিষ্কার ছিল। এক দিকে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে দিলীপ ঘোষ। আনন্দবাজার অনলাইনের বছরের বেস্ট অনুষ্ঠানে শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল দিলীপের। বোঝা গেল, পুরনো দিনের তিক্ততা এখন অতীত। সে সব ভুলে খোশগল্পে মাতলেন তাঁরা।
অনুষ্ঠান শেষে শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে দেখা হয় দিলীপের। তাঁদের হাসি মুখে কথা বলতে দেখা গেল। কথোপকথনে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, অনেক দিন পরে ওঁদের দেখা হয়েছে। ২০১৯ সালের অগস্টে বিজেপিতে যোগ দেন শোভন-বৈশাখী। তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন ও তাঁর বান্ধবী বৈশাখীর বিজেপিতে যোগদান হয়তো খুব ভাল ভাবে নেননি দিলীপ। বিজেপিতে থাকাকালীন শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে কথার ঠোকাঠুকি লাগত দিলীপের। এমনকি, শোভন-বৈশাখীকে ‘ডাল-ভাত’ বলেও কটাক্ষ করেছিলেন দিলীপ।
সেই সময় এখন বদলে গিয়েছে। বিধানসভার টিকিট না পেয়ে ২০২১ সালের মার্চ মাসে শোভন-বৈশাখী বিজেপি ছাড়েন। দিলীপও আর বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদে নেই। এমনকি, সাংসদ পদও গিয়েছে তাঁর। ফলে হয়তো তাঁরাও আর রাজনৈতিক ঠোকাঠুকি মনে রাখেননি। আনন্দবাজার অনলাইনের বছরের বেস্ট অনুষ্ঠানে দেখা হতেই দু’জন দু’জনকে জিজ্ঞাসা করেন, শরীর কেমন আছে? জবাবে দিলীপ বলেন, “আমার শরীর এখন পুরো ফিট। তবে আগের দিনের মতো তো আর ফিট নয়। যতটা ফিট রাখা যায়।” শোভনেরও যে বয়স হয়েছে সে কথা দিলীপ তাঁকে মনে করিয়ে দেন। বিজেপি নেতা বলেন, “আপনি আজ থেকে ৩০ বছর আগে যখন কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর ছিলেন তখন স্কুটার নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। এখন তো আর পারবেন না।” তা শুনে হাসেন শোভন।
দিলীপ সেখান থেকেও যাওয়ার পরেও রাজনৈতিক মেলবন্ধন চলতেই থাকে। দেখা যায়, শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে হালকা চালে আলাপচারিতায় মেতেছেন প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গেোপাধ্যায়। পরে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা হয় শোভন-বৈশাখীর। রূপা জানান, শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে একসঙ্গে সামনাসামনি কোনও দিন দেখাই হয়নি তাঁর। তাতে বৈশাখী পাল্টা বলেন, সামনাসামনি রূপার সঙ্গে তাঁর দেখা না হলেও রূপার এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির বাড়ির পাশে থাকতেন তিনি। এই অন্য ধরনের ছবিই বার বার দেখা গেল বছরের বেস্ট অনুষ্ঠানে। সেখানে শোভন-বৈশাখী-দিলীপ-অভিজিৎ-রূপারা রাজনৈতিক বিরোধিতা ভুলে মাতলেন খোশগল্পে।