মালবিকা সরকারের (বাঁ দিক) হাত থেকে পুরস্কার নিচ্ছেন দেবলীনা সরকার। —নিজস্ব চিত্র।
আবিষ্কারের নেশা তাঁর। রাত-দিন এক করেন নতুন কিছু আবিষ্কারের কাজে। ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির প্রধান আবিষ্কারক পদে রয়েছেন এই বঙ্গতনয়া। তৈরি করেছেন অণুর মতো পাতলা চিপ। অতি কম শক্তির জোগানে কাজ করা বৈদ্যুতিক সুইচ প্যানেল তৈরি করেছেন। প্রমাণ করে দিয়েছেন মস্তিষ্কের ক্যানসারও কমাতে পারে প্রযুক্তি। প্রযুক্তির ব্যবহারে মস্তিষ্কের আরও নানা অসুখ কমানোর পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁর নাম দেবলীনা সরকার। আনন্দবাজার অনলাইনের বছরের বেস্ট অনুষ্ঠানে সম্মানিত করা হয়েছে বিজ্ঞানী দেবলীনাকে। সেখানেই তিনি জানালেন, তাঁর জীবনের প্রফেসর শঙ্কু তাঁর বাবা।
সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্টি শঙ্কুও অদ্ভুত সব গবেষণা করতেন। তাঁরা গোটা দিন কাটত গবেষণায়। তেমনটাই কাটে দেবলীনারও। আনন্দবাজার অনলাইনের বছরের বেস্ট অনুষ্ঠানে দেবলীনার হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ও অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ডক্টর মালবিকা সরকার। তার পরে সঞ্চালক অনিন্দ্য জানা দেবলীনাকে প্রশ্ন করেন, আবিষ্কার কি কোনও অনুপ্রেরণা থেকে আসে? না কি এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার ফল? জবাবে দেবলীনা বলেন, “দুটোই। আমার বাড়িতে এক জন প্রফেসর শঙ্কু আছেন। আমার বাবা। ছোটবেলা থেকে দেখেছি বাবা নিজে বিভিন্ন গবেষণার কাজ করতেন। উনি এমন একটা ওয়াশিং মেশিন বানিয়েছিলেন যা বিদ্যুৎ ছাড়া চলে। এমন একটি পুলিং সিস্টেম বানিয়েছিলেন যা দিয়ে ভারী জিনিস সহজেই ছাদে তোলা যায়। সেগুলো দেখেই আমি প্রথম অনুপ্রেরণা পেয়েছিলাম।”
দেবলীনা নাকি ঘুমের মধ্যেও আবিষ্কারের কথা ভাবেন। স্বপ্নে দেখেন সেই সব কঠিন গবেষণার সমাধান। তিনি বললেন, “যখন গবেষণা করি তখন ধ্যানজ্ঞান সেখানেই থাকে। অনেক সময় এমন হয়, হয়তো কোনও একটা গবেষণা নিয়ে ভাবছি, কিন্তু কিছুতেই সমাধান হচ্ছে না, তখন স্বপ্নে অনেক সময় তার একটা সমাধান পাই। ঘুম থেকে উঠেই ভাবি সেটা নিয়ে বসতে হবে।” এ কথা শুনে অনিন্দ্য প্রশ্ন করেন, দেবলীনা কি স্বপ্নাদেশে গবেষণার সমাধান পান? জবাবে বাঙালি আবিষ্কারক বলেন, “আসলে দিন-রাত একটা কিছু নিয়ে ভাবলে সেটাই জীবনের সব কিছু হয়ে যায়। তখন সেটাই মাথায় ঘুরতে থাকে।”