পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। —নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি-র সভা ঘিরে রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বীরভূম। চলল গুলি, পড়ল বোমা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একাধিক জায়গায় নামানো হল বিশাল পুলিশ বাহিনী।
পূর্ব কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার বীরভূমের সিউড়িতে জনসভা ছিল বিজেপি-র। সেখানে যোগ দিতে একাধিক জায়গা থেকে আসছিলেন বিজেপিকর্মীরা। স্থানীয় বিজেপি-র অভিযোগ, সভায় আসতে চাওয়া দলীয় কর্মীদের বাধা দেয় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। বিজেপিকর্মীদের উপর বন্দুক নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগও ওঠে। নানুরের শিমুলিয়া গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষে গোলাগুলি শুরু হয়। এই ঘটনায় অভীক মণ্ডল নামে তাদের এক কর্মী আহত হয়েছেন বলে বিজেপি-র দাবি। অভীকের বুকে গুলি লেগেছে। আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে বিজেপি-র দাবি। যদিও তৃণমূল সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছে।
এই ঘটনার কথা চাউর হতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জেলার একাধিক এলাকা। সংঘর্ষ বাধে বিজেপি ও তৃণমূলকর্মীদের মধ্যে। ভাঙচুর হয় একাধিক গাড়ি। শুরু হয় ইটবৃষ্টি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় নামে বিশাল পুলিশ বাহিনী। ইটবৃষ্টি করা হয় পুলিশের উপরেও। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। দু’পক্ষের সংঘর্ষের এই ঘটনায় এক সিভিক ভলান্টিয়ার আহত হয়েছেন বলে পুলিশের দাবি।
নানুরে চলল গুলি। দেখুন ভিডিয়ো:
শুধু শিমুলিয়া নয়, সাঁইথিয়ার ভ্রমরকল গ্রামেও তৃণমূলকর্মীদের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। প্রতিবাদে তির-ধনুক নিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান বিজেপিকর্মীরা। বেশ কিছু ক্ষণ চলে সেই বিক্ষোভ। এ ছাড়া বীরভূমের ইলামবাজারেও বিজেপিকর্মীদের বাস আটকে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
আরও পড়ুন: ‘জেলে থাকলেও বাংলায় তৃণমূলকে জেতাব’, বাঁকুড়া থেকে চ্যালেঞ্জ মমতার
আরও পড়ুন: যোগদানের হিড়িকে ‘বল’ পাচ্ছে বিজেপি
এর পরিপ্রেক্ষিতে সিউড়ি জেলা স্কুল মাঠের জনসভা থেকে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘বীরভূমে এটা নতুন কিছু নয়। সভা করতে দেওয়া হয় না৷ আমাদের কর্মীদের উপর হামলা হচ্ছে। আমরা শুনেছি, আমাদের এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ভাবে লড়তে লড়তেই আমরা জিতব। মানুষ এই অত্যাচার সহ্য করবে না।’’ দিলীপ ঘোষের পাশাপাশি ওই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপি-র যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ, জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল-সহ অন্যান্য জেলার নেতৃত্বরা। তাঁরাও একযোগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন।
তৃণমূল যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। দলের বীরভূম জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘এই অভিযোগ একেবারেই মিথ্যা। তৃণমূলের বাধা দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। আমরা উন্নয়নকে হাতিয়ার করে এগিয়ে যাচ্ছি।’’
জেলার পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা গোটা ঘটনার তদন্ত করছি। ইতিমধ্যেই কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে৷’’