James Webb Space Telescope

JWST: আকাশ ভরা তারাদের ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখে সামিম

নাসা ১৩০০ কোটি বছর আগের ব্রহ্মাণ্ডের ছবি প্রকাশ করেছে। নাসার সেই ছবি নেট দুনিয়ায় এখন ভাইরাল।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

নঘরিয়া শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২২ ০৬:১৮
Share:

প্রধান শিক্ষকের মোবাইলে চোখ সামিমের। নিজস্ব চিত্র

‘এক আকাশ তারা একা গুনিস নে রে’। এ কথা মায়ের কাছে রোজই শুনতে হয় সামিমকে। জন্ম থেকেই তার ডান পায়ের তুলনায় ছোট বাঁ পা। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে হয় বছর তেরোর শেখ সামিমকে। তার পরেও রাত হলেই পড়ার পরে সে বসে পড়ে বাড়ির পাশে মাচার উপরে। আর চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে চেয়ে থাকে আকাশের দিকে। আকাশের তারার মতো জ্বলে উঠতে চায় ইংরেজবাজারের নতুনটোলা গ্রামের দিনমজুর পরিবারের ছেলে অষ্টম শ্রেণির শেখ সামিম। সে জানায়, “বড় হয়ে আকাশের তারা নিয়ে গবেষণা করতে চাই।” তার ‘তারা-প্রেমের’ কথা অজানা নয় স্কুলের শিক্ষকদেরও।

Advertisement

নাসা ১৩০০ কোটি বছর আগের ব্রহ্মাণ্ডের ছবি প্রকাশ করেছে। নাসার সেই ছবি নেট দুনিয়ায় এখন ভাইরাল। অন্ধকারের মধ্যে ঝলমলে সাদা, কমলা, নীল রঙের আলোর বিন্দুর ছবি দেখে আপ্লুত ইংরেজবাজার ব্লকের মিল্কি পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম নতুনটোলার ছেলে সামিমও। সে নঘরিয়া হাই স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুলের দাবি, ক্লাসে ১ থেকে ১০-এর মধ্যে সামিমের স্থান থাকে। এ দিন ক্লাসে প্রধান শিক্ষক তথা বিজ্ঞানমঞ্চের সহ-সভাপতি সুনীলকুমার সরকারকে পেয়ে নাসার প্রকাশিত ছবি দেখার আবদার করে সামিম। তার তারা-প্রেমের কথা জানেন প্রধান শিক্ষকও। কারণ, দশম, একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের টেলিস্কোপে গ্রহণ, নক্ষত্রের ছবি দেখানোর সময় হাজির হয়ে যায় সামিমও। আবদার মেনে মোবাইল ফোনে সামিমকে নাসার প্রকাশিত ছবিটি দেখান তিনি। তিনি বলেন, “ছেলেটির আকাশ, চাঁদ, তারার প্রতি খুবই আগ্রহ। তাই এ দিন সামিমের মুখে তারার কথা শুনে অবাক হইনি। আরও ভাল লেগেছে।” সামিম জানায়, “খবরে তারার কথা শুনেছি। তাই স্যরকে ক্লাসে দেখে তারার ছবি দেখার কথা মনে পড়ে যায়। এত কাছ থেকে কখনও তারা দেখতে পাব ভাবতে পারিনি। আকাশ, তারা নিয়ে আমিও গবেষণা করতে চাই।’’

সামিমের বাবা শেখ সহিদুর শ্রমিকের কাজ করেন। তাঁর স্ত্রী টুলি বিবি গৃহবধূ। পলেস্তারাহীন ইটের গাঁথনির উপরে টালির ছাউনি দেওয়া ঘরে তাঁদের বাস। দুই ছেলের মধ্যে সামিমই বড়। টুলি বলেন, “বাড়ির পাশেই বাঁশের মাচা আছে। সেই মাচায় পড়াশোনার পরে খাওয়াদাওয়া ছেড়ে ছেলে বসে থাকে। আর আকাশের দিকে চেয়ে থাকে। আকাশের তারা গুনছিস বলে বকাবকিও করি। ছেলের স্বপ্ন বিজ্ঞানী হওয়ার।” তবে, ‘‘জানি না স্বপ্নপূরণ করতে পারব কি না’’, আক্ষেপ করেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement