ভাঙাভাঙি শুরুর আগে। শনিবার সিঙ্গুরের প্রকল্প এলাকায় দীপঙ্কর দে-র তোলা ছবি।
নবান্ন সূত্র বলেছিল, টাটারা নিজেরাই শেড ভাঙে কিনা, দেখার জন্য আরও সাত দিন অপেক্ষা করা হবে। কিন্তু মত পাল্টে আজ, রবিবার থেকেই ভাঙাভাঙির কাজ শুরু করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। শনিবার সিঙ্গুরের প্রকল্প এলাকায় হুগলি জেলা প্রশাসন, কলকাতা পুরসভা এবং পূর্ত দফতরের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, শেডগুলি ভাঙার কাজ করবে কলকাতা পুরসভা, পিচ রাস্তা ভাঙবে পূর্ত দফতর।
এ দিনের বৈঠক শেষে হুগলির জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল জানান, শেডগুলি খুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য টাটাদের নোটিস দেওয়া হয়েছিল। সেই নোটিসে উল্লিখিত সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও কোনও জবাব আসেনি। তারা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগও করেনি। নবান্ন সূত্রে বলা হচ্ছে, টাটাদের কাছে সরাসরি কোনও নোটিস পাঠানো হয়নি। তা আটকে দেওয়া হয়েছিল কারখানার গেটে। প্রথমে ঠিক হয়েছিল, সময়সীমা পেরোনোর পরেও আরও কিছু দিন অপেক্ষা করা হবে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের বদল হয়েছে। কারণ, সর্বোচ্চ আদালত ১২ সপ্তাহের মধ্যে চাষিদের জমি ফেরাতে বলেছে। ইতিমধ্যেই প্রায় তিন সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। মাঝে পুজো। ফলে আর অপেক্ষা করলে আদালতের দেওয়া সময়সীমা মানার ক্ষেত্রে অসুবিধা হতে পারে।
জেলা প্রশাসন চায়, দিন দশেকের মধ্যে ভাঙার কাজ শেষ করতে। জেলাশাসক বৈঠকে প্রস্তাব দেন, লেজার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হোক। তা হলে দ্রুত কাজ সেরে ফেলা যাবে। কিন্তু কলকাতা পুরসভা এবং পূর্ত দফতরের প্রতিনিধিরা জানান, অল্প সময়ের মধ্যে কলকাতা থেকে সিঙ্গুরে নিয়ে গিয়ে ওই প্রযুক্তি কাজে লাগানো কঠিন। তাই সাবেক পদ্ধতি মেনেই চলতে চান তাঁরা। সেই মতো আজ, রবিবার দুপুরেই টাওয়ার ক্রেন-সহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ঢুকবে ন্যানো কারখানার চৌহদ্দিতে।
নবান্নের খবর, কারখানা চত্বরে ৩৫০ একর জমিতে ছ’টি শেড আছে। সব মিলিয়ে যার আয়তন প্রায় সাড়ে ১৩ লক্ষ বর্গফুট। পিচ-রাস্তা রয়েছে প্রায় ২০ কিলোমিটার। এ ছাড়া আছে ৩৮ একরের একটি জলাশয়, নর্দমা-নয়ানজুলি। শেড, রাস্তা ভাঙার পাশাপাশি সেগুলিও বোজাতে হবে।
পূর্ত দফতরকে ইতিমধ্যেই শেডগুলির বাজার দর নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। কারণ, ভবিষ্যতে যদি জেলাশাসককে সেগুলি নিলাম করতে হয়, তা হলে বাজার দর জেনে রাখা জরুরি। কারখানা চত্বরের পাশে শিল্প উন্নয়ন নিগমের ১৩ একরের একটি ফাঁকা জমিতে আপাতত ওই মালপত্র রাখা থাকবে।