শেখ শাহজাহান। —ফাইল চিত্র।
শেখ শাহজাহান কি তবে এত দিন অপেক্ষা করছিলেন দলনেত্রীর বিবৃতির জন্য? তাঁর ঘনিষ্ঠজন সূত্রের এমনই দাবি। এমন এক ব্যক্তি জানান, বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতার পরে শাহজাহান এখন মনে করছেন, তাঁর পাশে থাকার বার্তাই দিয়েছেন নেত্রী। শাহজাহান ঘনিষ্ঠ ওই ব্যক্তি আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন, এ বারে ভাইজান ‘ফিরবেন’।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির পরে ওই দিন শাহজাহান ঘনিষ্ঠেরা নিজেদের মধ্যে মিষ্টি বিলি করেন সন্দেশখালির আকুঞ্জিপাড়ায়। ওই এলাকায় শাহজাহানের বাড়ি। প্রশ্ন উঠেছে, সিবিআই আর পুলিশের যৌথ দল শাহজাহানকে ধরতে কবে অভিযান শুরু করবে? পুলিশের একটি সূত্রের বক্তব্য, আদালতে বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে।
গত ৫ জানুয়ারি আকুঞ্জিপাড়ায় তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি করতে গিয়ে আক্রান্ত হন ইডি আধিকারিকেরা। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় সেই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘সন্দেশখালিতে শাহজাহানকে টার্গেট করে ইডি ঢুকল।’’ এর প্রেক্ষিতে শাহজাহানের এক ঘনিষ্ঠ বলেন, ‘‘ভাইজান এত দিন নেত্রীর বিবৃতির জন্য অপেক্ষা করছিলেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘শাহজাহান ফিরলে সব ঠান্ডা হয়ে যাবে।’’
তা হলে কি আর ধরা পড়বেন না শাহজাহান বা তাঁর শাগরেদ শিবপ্রসাদ হাজরা? ডিজি (বারাসত রেঞ্জ) সুমিত কুমার বলেন, ‘‘যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তাদের সবাইকে গ্রেফতার করা হবে। যারা অশান্তি করবে, তাদেরও ধরা হবে। কেউ রেহাই পাবে না।’’ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করবেন না বলে জানান।
শাহজাহান চুপচাপ থাকলেও শিবপ্রসাদ বুধবার সংবাদমাধ্যমের একাংশের সামনে মুখ খুলেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘নারী নির্যাতনের যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তার কোনও ভিত্তি নেই। কোনও নির্যাতনের ঘটনা প্রমাণ হলে, আইন মেনে যা শাস্তি হবে, মাথা পেতে নেব।’’ তিনি বলেন, ‘‘আরএসএস-সিপিএম চক্রান্ত করে এলাকা উত্তপ্ত করছে।’’ তাঁকে তো পুলিশ খুঁজছে? শিবুর জবাব, ‘‘আমি দুষ্কৃতী নই। যদি দোষী প্রমাণ করতে পারে, তা হলে আইনে যা শাস্তি হবে, তা মাথা পেতে নেব।’’ সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতোর দাবি, ‘‘শিবপ্রসাদকে ফোনে পাচ্ছি না।’’
বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুকল্যাণ বৈদ্যের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘শিবপ্রসাদ সন্দেশখালিতে বসে সংবাদমাধ্যমকে ইন্টারভিউ দেওয়ার সাহস পাচ্ছেন কী করে?’’ সিপিএম নেতা প্রদ্যোৎ রায় বলেন, ‘‘শাহজাহানের মতো নেতার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এটা গোটা রাজ্যের লজ্জা।’’