চুরুলিয়ায় নজরুল ইসলামকে শ্রদ্ধা ঐশী ঘোষের। ডান দিকে, এসএফআইয়ের পদযাত্রা। নিজস্ব চিত্র।
ঘোষিত দাবি, জাতীয় শিক্ষানীতি বাতিল করতে হবে। পোশাকি নাম ‘মার্চ ফর এডুকেশন’ বা ‘শিক্ষার জন্য পদযাত্রা’। এই জাঠা বা পদযাত্রাকে ঘিরেই জেলায় জেলায় সংগঠনকে চাঙ্গা করতে চাইছে সিপিএমের ছাত্র শাখা। চেষ্টা চলছে বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য ভবিষ্যতের বাহিনীকে তৈরি রাখার।
দেশের পাঁচ প্রান্ত থেকে এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় ছাত্র জাঠা পথ হাঁটতে শুরু করেছে গত ১ অগস্ট থেকে। আমদাবাদে শেষ জাঠার পরে সমাবেশ হবে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর। আর ওই পাঁচটির মধ্যে দু’টি জাঠা এই রাজ্যের ২২টি জেলায় ২৫০০ কিলোমিটারের বেশি পথ ঘুরে কলকাতায় এসে মিশলে ছাত্র সমাবেশ হবে ২ সেপ্টেম্বর। যেখানে প্রধান বক্তা বিমান বসু। জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতা করে ‘বিকল্প শিক্ষানীতি’র খসড়া প্রকাশিত হবে সে দিন কলেজ স্ট্রিটে।
ত্রিপুরা ও অসম হয়ে আসা উত্তর-পূর্বের জাঠা কোচবিহারের বক্সিরহাট হয়ে বাংলায় ঢুকে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা ছুঁয়ে মালদহে পৌঁছেছে। আবার বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা থেকে আসা পূর্ব ভারতের আর একটি জাঠা পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা হয়ে দক্ষিণবঙ্গের নানা জেলায় ঘুরছে। এসএফআইয়ের রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস, দীপ্সিতা ধর, ঐশী ঘোষেরা পালা করে এই জাঠার সঙ্গে রয়েছেন। এসএফআইয়ের দাবি, আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা, পুরুলিয়ায় তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন বা পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপির সঙ্গে টক্কর নিয়ে জাঠা এগিয়েছে, সমাবেশ হয়েছে। দুর্গাপুরে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ছাত্র বিক্ষোভ হয়েছে।
এসএফআই নেতৃত্বের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় শিক্ষা নীতি দরিদ্র বা মধ্যবিত্ত পড়ুয়াদের প্রতি সুবিচার করে না, শিক্ষার বেসরকারিকরণের রাস্তাও প্রশস্ত করে। মুক্তচিন্তার পরিসরকে সেখানে উৎসাহ দেওয়ার চিহ্ন নেই। তার বিপরীতে বিকল্প নীতির কথা বলার পাশাপাশিই জেলায় জেলায় দেশজ মনীষী, স্বাধীনতা সংগ্রামের শহিদ বা বাংলার সমাজজীবনে দীর্ঘমেয়াদি ছাপ রেখে যাওয়া ব্যক্তিত্বদের জন্মভূমি বা কর্মক্ষেত্রে গিয়ে তাঁদের স্মরণ করা হচ্ছে পদযাত্রার অবসরে। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য, সর্বভারতীয় নেত্রী দীপ্সিতাদের বক্তব্য, ‘‘আরএসএস-বিজেপির সাংস্কৃতিক আগ্রাসনকে প্রতিহত করতে গেলে এই বিপুল বৈচিত্র্যের ঠাসবুনোটে গড়ে ওঠা মানবতার মহাসাগরকে, আমাদের মিলেমিশে বাঁচার ইতিহাসকে উদযাপন করতেই হবে। ওরা যত একমাত্রিক সমাজের কথা বলবে, আমরা তুলে ধরব সহিষ্ণু বহুমাত্রিক বিবিধতায় ভরা বাংলার ইতিহাসকে।’’