দুপুর ১২টায় বামেদের সভা ধর্মতলা চত্বরে। ফাইল চিত্র।
আনিস খান হত্যা থেকে শুরু করে কলকাতার রাস্তায় দিনের পর দিন আন্দোলনে বসা চাকরিপ্রার্থীদের প্রাপ্য চাকরি দেওয়া— সব সমস্যার বিহিত চেয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে ধর্মতলায় ইনসাফ সভা করছে বামেরা। বাম ছাত্র যুবদের দু’টি শাখা এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই ওই সভার ডাক দিয়েছিল। যদিও সভা করার অনুমতি মঙ্গলবার, সভার দিন সকাল ১১টা পর্যন্ত দেওয়া হয়নি পুলিশের তরফে। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, অনুমতি না থাকায় সভায় আসা বাম ছাত্র-যুবদের পুলিশ বাধা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রশাসনের সঙ্গে বাম ছাত্রদের অশান্তির আশঙ্কাও থাকছে। যদিও এ ব্যাপারে ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছেন, ‘‘পুলিশের মিছিলের অনুমতি দেওয়ার এক্তিয়ারই নেই। আর যেখানে এক্তিয়ারই নেই, সেখানে বেশি কথা না বলাই ভাল।’’
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার এই সভা ঘিরে তিন জায়গায় জমায়েত হতে চলেছে। শিয়ালদহ স্টেশন, হাওড়া স্টেশন এবং পার্ক স্ট্রিটে বাম ছাত্র-যুবরা জমায়েত করে সেখান থেকে এগোবে ধর্মতলার সভাস্থলের দিকে। কিন্তু এই মিছিল এবং জনসভা কি সফল হবে? বামেরা যে ইনসাফ বা বিহিতের দাবি করছেন, তা কি সত্যিই পাওয়া যাবে? জবাবে মীনাক্ষী বলেছেন, ‘‘ইনসাফ আমরা সাধারণ মানুষের জন্য গোটা সিস্টেমের থেকে চাইছি। কাজ, কারখানা, শিক্ষার অবস্থা খারাপ রাজ্যে। যে কারণে এখানে সাধারণ ছাত্র যুবরা রাস্তায় দিনের পর দিন বসে থাকছে, যে কারণে আনিস, সুদীপ্ত, মইদুল, বিদ্যুৎদেরকে খুন হয়ে যেতে হচ্ছে। এর তো একটা বিহিত চাই, প্রতিকার চাই। সেই প্রতিকারের জন্যই আমরা রাজ্যের মানুষকে যুবদেরকে সংগঠিত করার কথা বলেছিলাম। ২০ তারিখ ধর্মতলায় সভা করতে চেয়েছিলাম। যাঁরা আসবেন তাঁদেরকে নিয়ে সভা হবে।’’ অর্থাৎ সভার সাফল্যের থেকেও বেশি রাজ্যের যুব সম্প্রদায়কে সংগঠিত করাই মূল লক্ষ্য বামেদের।
ধর্মতলা চত্বরে সামান্য জায়গা নিয়ে চেয়ার পেতে সভার আয়োজন করা হয়েছে। সূত্রের খবর, এই সভার জন্য ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনের জায়গাটি চেয়েছিলেন বামেরা। কিন্তু সেই অনুমতিও মেলেনি। সভা কি তবে ছোট হবে? প্রশ্নের জবাবে মীনাক্ষী অবশ্য বলেছেন, ‘‘১২টা বাজতে দিন না। তার পরে দেখবেন। কমরেডরা আসছেন, বামপন্থী মানুষজন আসছেন, সাধারণ মানুষ আসবেন, আক্রান্তরা আসবেন। বঞ্চিত, হতাশাগ্রস্ত সবাই আসবেন। মানুষ এলে তাঁরাই নিজেদের জায়গা করে নেবেন।’’
বামেদের এই সভায় গোলমালের আশঙ্কা করে অবশ্য মঙ্গলবার সকাল থেকেই ধর্মতলা চত্বরে কড়া পুলিশি প্রহরা বসেছে, রয়েছে প্রিজন ভ্যানও। তবে কি বড় ধরনের সঙ্ঘাতের আশঙ্কা থাকছে? জবাবে পুলিশের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে মীনাক্ষী বলেন, ‘‘আমাদের প্রথম দিন থেকে একটাই প্রশ্ন, পুলিশের অনুমতি দেওয়ার আইনত কোনও এক্তিয়ার নেই। এটা ওঁরা নিজেরাও বলেছেন। ফলত যে বিষয়ে এক্তিয়ার নেই, তা নিয়ে বেশি কথা না বলাই ভাল। সভাটা হচ্ছে। ওঁরাও থাকুন। কমরেডরাও এসেছেন। নিজেদের অধিকারের জন্য এসেছেন। ইনসাফের জন্য এসেছেন। ১২টা বাজতে দিন। তার পর দেখা যাবে।’’