গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
বগটুই-কাণ্ডে কলকাতা হাই কোর্টের শুনানিতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠল একাধিক প্রশ্ন। ঘটনা ঘটার আগে থেকেই পুলিশ জানত কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বৃহস্পতিবার উচ্চ আদলতে আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘মৃত সাত জনের দেহে আঘাতের চিহ্ন দেখা গিয়েছে। তবে কি পোড়ানোর আগেই তাঁদের হত্যা করা হয়েছিল? আর যদি তাই-ই হয়ে থাকে, তবে ময়নাতদন্তের পর এখনও কেন তা পরিষ্কার করেনি পুলিশ।’’
এডুলজির দাবি, মানুষের শরীরে ৬০ শতাংশ জল থাকে। প্রায় ৩০ মিনিট পোড়ালে ওই জল বেরিয়ে যায়। জল বেরিয়ে গেলে যে কোনও ভারী দেহকে অনায়াসে তুলে আনা যায়। তাঁর কথায়, ‘‘এ ক্ষেত্রে ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে হাতে করে সম্পূর্ন দগ্ধ দেহগুলি তুলে এনেছে পুলিশ। ফলে ধরে নিতেই হবে ওই দেহগুলি ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে পুড়েছিল। সিট বা পুলিশের নজরে কি এই বিষয়টি এখনও এসেছে? এলে তারা ওই বিষয়ে নিশ্চুপ কেন।’’
এই হত্যার ঘটনায় টাওয়ার ডাম্পিং টেকনোলজির তত্ত্ব সামনে আনেন আইনজীবী এডুলজি। তাঁর যুক্তি, ‘‘এই টেকনোলজির সাহায্যে ওই সময় ঘটনাস্থলে যদি কোনও মোবাইল থাকে তা জানা যাবে। সেই সূত্র ধরে মোবাইল ব্যবহারকারীদের নাম জানা গেলেও অভিযুক্ত সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। তদন্তকারীরা সে দিকে কি নজর দিয়েছে? যদি হয়, তবে ওই ব্যবহারকারীদের শনাক্ত করে সিমকার্ড এখনও বাজেয়াপ্ত করা হয়নি কেন? রাজ্যের ফরেন্সিক দল নমুনা সংগ্রহের সময় ভিডিয়োগ্রাফি করেছে কি না তা তারা প্রকাশ্যে আনেনি।’’
এখনও অবধি মৃতদের নাম প্রকাশ করেনি সরকার। ওই আইনজীবীর কথায়, ‘‘এটাও কি এখনও বলতে পারবে না পুলিশ? গ্রামের বাসিন্দাদের রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড এবং আধার কার্ড যাচাই করে এটা বলা অতি সহজ।’’ রাজ্যের কাছে এডুলজি জানতে চান, ‘‘ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পর তদন্তের জন্য তড়িঘড়ি সিট গঠনের কথা বলা হচ্ছে। সিট কি তদন্তকারী অফিসারকে কোনও নির্দেশ দিয়েছিল? সেটা কি কেস ডায়েরিতে আছে? যদি নির্দেশ না দিয়ে থাকে তবে বলতে হবে তদন্ত ঠিক মতো শুরুই হয়নি।’’
ঘটনার পর চার দিন কেটে গেলেও এই সব প্রশ্নের জবাব পুলিশ দিতে না পারায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানান জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবী এডুলজি। তবে রাজ্যের তরফে এখনও কোনও তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি।