National Library

পদ শূন্য, বেহাল জাতীয় গ্রন্থাগার

জাতীয় গ্রন্থাগার সূত্রের খবর, পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ ফাঁকা থাকায় সেই সব পদ অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:২৫
Share:

জাতীয় গ্রন্থাগার

সর্বময় কর্তার দায়িত্ব এক জনকে দেওয়া আছে। কিন্তু সেই ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর জেনারেল ছাড়া জাতীয় গ্রন্থাগারে স্থায়ী ডিরেক্টর জেনারেলের পদ খালি। খালি লাইব্রেরিয়ান বা গ্রন্থাগারিকের মতো বহু পদও। অনেক পদ দীর্ঘদিন খালি পড়ে থাকতে থাকতে লোপ পেয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, এই ব্যাপক পদ-শূন্যতায় জাতীয় গ্রন্থাগারের দৈনন্দিন কাজের পরিকাঠামো ধুঁকছে। অভিযোগ, বই সংরক্ষণ করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে বহু পদ খালি থাকায় বইয়ের সংরক্ষণও ঠিকমতো হচ্ছে না।

Advertisement

জাতীয় গ্রন্থাগার সূত্রের খবর, পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ ফাঁকা থাকায় সেই সব পদ অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। এমন পদ ১০২টি। প্রিন্সিপাল লাইব্রেরি ইনফর্মেশন অফিসারের দু’টি পদই খালি। জাতীয় গ্রন্থাগারে বাংলা-সহ ১৮টি ভাষা বিভাগ আছে। বাংলা বিভাগে প্রধান পদ অ্যাসিস্ট্যান্ট লাইব্রেরি ইনফর্মেশন অফিসারের। দীর্ঘদিন ফাঁকা পড়ে থেকে সেটিও অবলুপ্ত। প্রতিষ্ঠানের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাংলা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো নেই। অন্য ভাষা বিভাগের বাংলা জানা কর্মীরা কাজ চালাচ্ছেন। কিন্তু পঞ্জাবি, চিনা, রুশ ভাষা বিভাগে কাজ চালানো কর্মীও কার্যত নেই।’’

জাতীয় গ্রন্থাগারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হল সংরক্ষণ। ওই বিভাগে রয়েছে বুক বাইন্ডিং, ল্যাবরেটরি ও রিপ্রোগ্রাফি। তিন উপ-বিভাগেরই অধিকাংশ পদ ফাঁকা পড়ে থেকে থেকে অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। বুক বাইন্ডিং উপ-বিভাগে গিয়ে দেখা গেল, সেটি কার্যত কর্মী-শূন্য। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না-হওয়ায় বুক বাইন্ডিং মেশিনে ধুলো জমেছে। প্রকাশকেরা কোনও বই প্রকাশ করলে একটি বই জাতীয় গ্রন্থাগারে দেন। কিন্তু বই সংরক্ষণের উপ-বিভাগটি ধুঁকতে থাকায় পুরনো বইয়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন বইয়ের যথাযথ সংরক্ষণ হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement

জাতীয় গ্রন্থাগারে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে পড়াশোনা করতে যান দিলীপ মজুমদার নামে এক শিক্ষক। বইও লিখেছেন তিনি। দিলীপবাবু বললেন, ‘‘নিজের লেখা বই ২০১১ সালে দিয়েছিলাম জাতীয় গ্রন্থাগারে। সেই বই এখনও ক্যাটালগে ওঠেনি। বইয়ের ক্যাটালগ আপডেট না-হওয়ায় রিডিং রুমে বই পড়তে এসে বহু বই পাওয়া যাচ্ছে না।’’ তিন বছর ধরে গবেষণার কাজে জাতীয় গ্রন্থাগারে যাচ্ছেন জয়ন্তী মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘সংরক্ষণ বিভাগের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, পুরনো নথি বা বই যা চাই, প্রায় কিছুই পাই না। বহু বার অভিযোগ করেও কোনও ফল হয়নি। আমার গবেষণার কাজ ব্যাহত হচ্ছে।’’

জাতীয় গ্রন্থাগারের প্রাক্তন কর্মী তথা জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব অ্যাকশনের রাজ্য শাখার সচিব শৈবাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ যেন হাসপাতাল আছে, অথচ ডাক্তার নেই! বেশ কিছু বিভাগে গ্রন্থাগারিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ অবলুপ্ত। ফলে জাতীয় গ্রন্থাগারে মনস্ক পাঠক কমছে।’’ গ্রন্থাগারের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর জেনারেল পদ্মলোচন সাহু বলেন, ‘‘যে-সব পদ খালি, দ্রুত সেগুলো পূরণের ব্যবস্থা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement