অনুব্রতের ‘যত্ন’ নিচ্ছেন সহগল। ফাইল চিত্র।
দেহরক্ষী হিসাবে দীর্ঘদিন অনুব্রত মণ্ডলের ‘ছায়াসঙ্গী’ ছিলেন সহগল হোসেন। গরু পাচার মামলায় বিচারাধীন বন্দি হয়ে এই মুহূর্তে আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারে রয়েছেন দু’জনই। এবং জেল সূত্রের খবর, সেখানেও কার্যত সর্বক্ষণ অনুব্রতের ‘যত্ন’ নিচ্ছেন সহগল।
অনুব্রতের আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁকে দিনে ৩৭টি ওষুধ খেতে হয়। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পরতে হয় অক্সিজেন মাস্ক। প্রয়োজনে কয়েক বার নেবুলাইজ়ারও নিতে হয়। তাঁর জেল হেফাজত হওয়ার পরে ঘনিষ্ঠেরা চিন্তায় ছিলেন, সেখানে এত ‘ঝক্কি’ অনুব্রত নিজে সামলাবেন কী ভাবে! তবে সংশোধনাগারে যাওয়ার আগে ঘনিষ্ঠমহলকে অনুব্রত না কি আশ্বস্ত করেছিলেন, সেখানে সহগল আছে। তাই চিন্তা নেই।
অনুব্রতের এমন ‘ভরসা’ অমূলক নয় বলেই জেল কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি। গ্রেফতার হওয়ার আগে সহগলই কার্যত আগলে রাখতেন অনুব্রতকে। অনুব্রতের ওষুধপত্র, খাওয়াদাওয়া-সহ প্রায় সবই তাঁর নখদর্পণে। সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অনুব্রতের কার্যত ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকছেন সহগল। অনুব্রত খাওয়াদাওয়া ঠিক মতো করছেন কি না, খোঁজ রাখছেন। ওষুধ খাইয়ে দিচ্ছেন, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে অনুব্রতকে অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে দিচ্ছেন। নেবুলাইজ়ারের ব্যবস্থাও করছেন।
সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি সেলে আরও ছ’জন সহ-আবাসিকের সঙ্গে রয়েছেন অনুব্রত। পাশের সেলেই রয়েছেন সহগল। সকালে প্রাতরাশ সেরে সহগলের সঙ্গেই সংশোধনাগার চত্বরে অল্পবিস্তর হাঁটাহাঁটি সেরে নিচ্ছেন বীরভূমের কেষ্ট। অনুব্রতের প্রতি সহগলের যত্ন দেখে খানিক নিশ্চিন্ত সংশোধনাগারের কর্মীদের একাংশও। তাঁদের কয়েক জনের মন্তব্য, “চিন্তায় ছিলাম। ওঁর নিত্য খোঁজখবর করছেন কেউ, তা তো ভালই।” তবে সব কিছু নিয়ম মেনেই চলছে বলে দাবি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের।
বৃহস্পতিবার অনুব্রতের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয় আসানসোল জেলা হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুব্রতের ওজন ১০৯.৯ কেজি। সে দিন অনুব্রতের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ছিল প্রায় ৯৮ শতাংশ। প্রতি ডেসিলিটার রক্তে শর্করার মাত্রা ছিল ১২৭ মিলিগ্রাম। রক্তচাপ ছিল ১৪০/১০০, যা স্বাভাবিকের থেকে বেশি। তবে ‘বডি মাস ইনডেক্স’ অনেকটাই বেশি বলে চিকিৎসকেরা জানান। সংশোধনাগারের সুপার কৃপাময় নন্দী বলেন, “তেমন প্রয়োজন হলে নিশ্চয় ফের ওঁকে চিকিৎসককেদেখানো হবে।”