—প্রতীকী ছবি।
দেশের বিভিন্ন আদালতে ঢুকে আসামি-অভিযুক্তদের উপরে হামলা-হত্যার ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। এই অবস্থায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার তাগিদে কলকাতা হাই কোর্টের প্রতিটি গেটে বসানো হয়েছে স্ক্যানার। উচ্চ আদালতের সর্বত্রই যান্ত্রিক চোখের নজরদারি। প্রায় তিনশো সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে অতন্দ্র প্রহরা চলছে চব্বিশ ঘণ্টা। এই কড়া নিরাপত্তা ঘেরাটোপের মধ্যেও কোনও অবাঞ্ছিত ব্যক্তি যাতে ঢুকে পড়তে না-পারে, সেই জন্য এ বার আরএফআইডি বা রেডিয়ো ফ্লাইং আইডেন্টিফিকেশন ডিভাইস চালু করার পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন। আদতে এটি একটি চুম্বকযুক্ত স্মার্ট কার্ড, গেটের চাবি।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, আরএফআইডি কার্ড থাকলে তবেই হাই কোর্টের গেট পেরিয়ে ভিতরে ঢোকা যাবে। প্রথম দফায় ওই কার্ড চালু করা হচ্ছে উচ্চ আদালতের কর্মী এবং আইনজীবীদের গাড়িচালকদের জন্য। তার পরের দফায় হাই কোর্টের সঙ্গে যুক্ত বাকি লোকজন একই কার্ড পাবেন। ইতিমধ্যে একটি সংস্থাকে ওই কার্ড তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনটি ভবন নিয়ে কলকাতা হাই কোর্ট। পুরনো ভবন, সেন্টিনারি ভবন এবং সেস্কুই সেন্টিনারি ভবন। প্রবেশ-প্রস্থানের জন্য রয়েছে ১১টি গেট বা ফটক। তার মধ্যে বিচারপতিদের জন্য ফটক নির্দিষ্ট করা আছে। কয়েকটি গেট বন্ধই থাকে সারা ক্ষণ। সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের যাতায়াতের জন্য আছে ‘ই’ গেট। ‘বি’ গেট দিয়ে কোর্ট-কর্মী, আইনজীবী এবং তাঁদের গাড়িচালকেরা প্রবেশ করতে পারেন। কলকাতা পুলিশের খবর, হাই কোর্টের তিনটি ভবনে আপাতত নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন এক জন এসি বা অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার, তিন জন ইনস্পেক্টর-সহ কয়েকশো পুলিশকর্মী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, নতুন ব্যবস্থা আরএফআইডি চালু হলে কর্মীদের একটি সচিত্র পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। সেই কার্ডে থাকবে একটি ম্যাগনেটেড চিপ বা চুম্বক-চিপ। গেটেও অনুরূপ একটি চিপ থাকবে। কলকাতা হাই কোর্টে কয়েক হাজার কর্মী এবং কৌঁসুলিদের গাড়িচালক আছেন। প্রথমে তাঁদের ওই স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে। ওই সচিত্র পরিচয়পত্র তৈরির কাজ চলছে। এক আধিকারিক জানান, পরে আইনজীবীদের ওই কার্ড দেওয়া হবে বলে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই তালিকায় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।
কোর্ট-কর্মীদের একটি অংশের বক্তব্য, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন জায়গার আদালতে দুষ্কৃতীরা যে-ভাবে পরিচয় লুকিয়ে ভিতরে ঢুকে কোনও কোনও মামলার অভিযুক্তদের খুন করে চলে যাচ্ছে, লালবাজার তাতে চিন্তিত। ওই ধরনের ঘটনা আটকাতেই হাই কোর্টে নিরাপত্তার নতুন ব্যবস্থা খুব দ্রুত চালু করতে চাইছে পুলিশ।