—প্রতীকী ছবি
বিজেপির হাতে দেশ বিপন্ন। এই অবস্থায় আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির মোকাবিলায় গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ঐক্যের পক্ষেই সওয়াল উঠে এল সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে। লোকসভা ভোটের বাতাবরণ অনেকটাই তৈরি করে দেবে নভেম্বর-ডিসেম্বরে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। সেখানেও অধিকাংশ জায়গায় কংগ্রেস-সহ ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির সঙ্গে জোট বেঁধে বিজেপির মোকাবিলায় নামার পক্ষেই মত ভারী।
দিল্লিতে কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের বৈঠক শেষ হবে আজ, সোমবার। বৈঠক চলাকালীনই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। ভোটমুখী রাজ্যগুলির মধ্যে রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে কৃষক আন্দোলনের দৌলতে কিছুটা জমি তৈরি করতে পেরেছে বামেরা। ওই রাজ্যগুলির নেতারা বৈঠকে মত দিয়েছেন, বিজেপির এ বার ক্ষমতা হারানোর সম্ভাবনা প্রবল। মায়াবতী যখন কংগ্রেসের পাশ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, সেই সময়ে বিজেপি-বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ ঐক্য গড়ে তোলার সুযোগ বামেদের হাতছাড়া করা উচিত নয়। ছত্তীশগঢ়ের নেতারা মনে করেন, আগেই সার্বিক ঐক্যের বিষয়ে সব পক্ষের নজর দেওয়া উচিত ছিল। তেলঙ্গানা অবশ্য উল্টো পথের পথিক! সেখানে গত জানুয়ারিতেই বিজেপি ও কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বাম ও অম্বেডকরপন্থী দলগুলি মিলে তৈরি করা হয়েছে বহুজন বামফ্রন্ট। তেলঙ্গানা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তাম্মিনেনি বীরভদ্রম নিজেই ওই ফ্রন্টের আহ্বায়ক। বীরভদ্রমেরা সেই ফ্রন্টের হয়েই বিধানসভার ১১৯টি আসনে লড়তে চান, অপেক্ষা করতে চান মায়াবতীর সিদ্ধান্তেরও।
বাংলার নেতারা এ বারের বৈঠকে প্রত্যাশিত ভাবেই লোকসভায় কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার পক্ষে সরব হয়েছেন। তাঁরা বৈঠকে ব্যাখ্যা করেছেন, তৃণমূলের রাজনীতি কী ভাবে আখেরে বিজেপির বৃদ্ধিতে সহায়ক হচ্ছে। কোন রাজ্যে কেমন সমঝোতা করে কত আসনে লড়াই দেওয়া সম্ভব, তার প্রাথমিক তালিকাও জমা পড়েছে কেন্দ্রীয় কমিটিতে। কেরলে অবশ্য কংগ্রেসের থেকে দূরত্ব রেখেই ১০-১২টা লোকসভা আসন জয়ে আশাবাদী রাজ্য নেতৃত্ব।
এরই পাশাপাশি কংগ্রেসের তোলা রাফাল-প্রশ্নে মাঠে নামছে সিপিএমও। গণসংগঠনের ‘জন একতা জন অধিকার মঞ্চ’কে সামনে রেখে রাফাল নিয়ে কেন্দ্র-বিরোধী একগুচ্ছ প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘বিজেপিকে ঠেকানোই মূল লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই নির্বাচনী কৌশল চূড়ান্ত হবে।’’