ফাইল চিত্র।
ব্রিগেডে যৌথ সমাবেশের আগের রাতেও অধরাই থাকল জোটের চূড়ান্ত ফয়সালা। ব্রিগেড-পর্ব মিটিয়ে কাল, সোমবার ফের আলোচনায় বসতে পারেন সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব।
তবে আসন-রফার ছবি পুরোপুরি স্পষ্ট না হলেও বাম, কংগ্রেস এবং আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টকে (আইএসএফ) নিয়ে এ বারের বিরোধী জোট ‘সংযুক্ত মোর্চা’ নামে বিধানসভা ভোটের ময়দানে নামতে পারে। তিন পক্ষের মধ্যে এই মর্মে মোটামুটি সহমত তৈরি হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভোটের প্রচারে ‘বামফ্রন্ট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী’ বা ‘কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্টের প্রার্থী’ না লিখে ‘সংযু্ক্ত মোর্চা’র নাম ব্যবহার করা হবে। এই নামকরণ আজ, রবিবার ব্রিগেড সমাবেশে ঘোষণা করে দেওয়ার তোড়জোড়ও চলছে।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে গিয়ে শনিবার বিকালে সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে কংগ্রেস নেতারা। সেই দলে ছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী ও নেপাল মাহাতোরা। সূত্রের খবর, কংগ্রেস দাবি করেছে আইএসএফ-কে তারা যত আসন ছাড়বে, সেই সংখ্যক কেন্দ্র তাদের পুষিয়ে দিতে হবে বামেদের। আইএসএফ-কে ইতিমধ্যেই ৩০টি আসন দেওয়ার কখা বলেছে সিপিএম। তাদের বক্তব্য, অন্য কোনও পক্ষ আসন না ছেড়ে শুধুই দাবি করে চললে কী ভাবে মীমাংসা সম্ভব! ঠিক হয়েছে, মীমাংসা-সূত্রের খোঁজে সোমবার ফের দু’পক্ষের আলোচনা হবে। তার মধ্যে আইএসএফের সঙ্গে কথা বলবেন বিরোধী দলনেতা মান্নান।
পরে বিধান ভবনে রাত পর্যন্ত নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেখানে ছিলেন বাংলায় এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক জিতিন প্রসাদও। এআইসিসি-র সম্পাদক আর এস বালি এখন থেকে পর্যবেক্ষক জিতিনের সহযোগী হবেন বলে এ দিনই জানিয়েছেন এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপাল।
জোট-বৈঠকের পরে অধীরবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আলোচনা চলছে। দু’-তিন দিনে বিষয়টা মিটে যাবে।’’ প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার থেকে প্রথম পর্বের মনোনয়ন জমা শুরু হবে। সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেছেন, বৈঠকে ব্রিগেড সমাবেশ নিয়েই বেশি আলোচনা হয়েছে।
কংগ্রেসের উপরে চাপ বজায় রেখেছেন আব্বাসও। ‘জঙ্গলমহল একতা মঞ্চের’ সভার পরে এ দিন বাঁকুড়ার সুনুকপাহাড়িতে আব্বাস ‘‘বামেদের কাছ থেকে আমরা আসন চেয়েছিলাম, ওরা দিয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা শেষ হয়নি। আমরা কারও সঙ্গে নই, আমরা বন্ধুদের সঙ্গে। আমি যেখানে প্রার্থী দেব, সে যদি সেখানে প্রার্থী না দেয়, তা হলে বন্ধুত্ব হল। সে যেখানে দেবে, আমরা তাকে সমর্থন করব। মানুষের স্বার্থে এই ঐক্য, ভোট ভাগ হলে আমাদেরই ক্ষতি হবে।’’ কংগ্রেস প্রসঙ্গে তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘তারা যদি মনে করে আমাদের সঙ্গে চলবে, তা হলে বাকি জায়গাতেও কংগ্রেসকে আমরা সমর্থন করব। জোট হবে বলেই আমরা আশাবাদী।’’