শীতে শিশুর যত্ন নিতে কী করবেন বাবা-মায়েরা? ফাইল চিত্র।
বাতাসে ঠান্ডার আমেজ। গত কয়েক দিনে তাপমাত্রা আরও খানিকটা নেমেছে। সন্ধ্যা ঘনালেই হিমেল হাওয়া জানান দিচ্ছে, শীত সমাগত। ঋতু বদলের এই সময়টাতেই কখনও গরম আবার কখনও ঠান্ডায় চট করে শরীর খারাপ হয়ে যায়। বিশেষ করে শিশুরা বেশি ভোগে এই সময়ে। ঠান্ডা লাগার ধাত থাকলে খুব তাড়াতাড়ি সর্দিকাশি ধরে যায়। ভাইরাল জ্বরেও ভোগে শিশু। শীতের সময়ে রোগভোগের হাত থেকে সন্তানকে বাঁচাতে বিশেষ যত্ন নিতেই হবে বাবা-মাকে।
এই বিষয়ে শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল জানাচ্ছেন, হেমন্তের সময়টাতেই হিম পড়ে ঠান্ডা লেগে যায় শিশুদের। তাই মাথা সব সময়ে ঢেকে রাখতে হবে। বিশেষ করে খুব সকালে স্কুলে যায় যে শিশুরা, তাদের গরম জামাকাপড় পরাতেই হবে। সন্ধ্যার দিকে বাইরে বেরোলেও মাথা স্কার্ফ বা টুপিতে ঢেকে দিন। ঠান্ডার লাগার ধাত থাকলে গলাও ঢেকে রাখতে হবে।
রাতের দিকে অনেকেই পাখা চালাচ্ছেন এখনও। যদি পাখা চালাতেই হয়, তা হলে গতি কম করে রাখবেন। সারা রাত শিশুর গায়ে পাতলা চাদর রাখবেন, তবে খুব ভারী কিছু তার গায়ে চাপিয়ে রাখবেন না। ঘুমের সময় শরীরের মেটাবলিক রেট কম থাকে। খুব বেশি ঢাকাচাপা দিলে হজমের সমস্যা হতে পারে।
শীতের স্নান নিয়েও অভিভাবকদের মনে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ, উষ্ণ জলে প্রতি দিনই স্নান করানো যেতে পারে শিশুকে। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে, শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। তবে যদি টনসিল ফুলে যায় বা খুব হাঁচি-কাশি হতে থাকে, তা হলে এক দিন অন্তর স্নান করাবেন অথবা গরম জলে তোয়ালে ভিজিয়ে গা মুছিয়ে দেবেন। স্নানের পরেই ভাল করে গা মুছিয়ে গরম জামা পরিয়ে দিতে হবে।
শীতে ত্বকের অ্যালার্জিও বেশি হয় শিশুদের। কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস থাকলে র্যাশ বা ফুস্কুড়ি হতে দেখা যায় ত্বকে। সে ক্ষেত্রে সব সময়েই চেষ্টা করতে হবে গ্লিসারিন সাবান ও কম ক্ষারযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করার। অ্যালার্জি হলে শিশুকে তেল মালিশ করাবেন বা তার গায়ে ময়েশ্চারাইজ়ার লাগাবেন কি না, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নিতে হবে। সুতির জামাকাপড়ই বেশি পরাবেন শিশুকে। সিন্থেটিক কিছু পরালে র্যাশের সমস্যা বাড়বে।
রোগ থেকে রক্ষা করতে চাওয়ার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে তুলুন শিশুর। ভিটামিন সি যুক্ত ফল, মরসুমি সব্জি খাওয়ান। প্রচুর শাকসব্জি খাওয়াতে হবে শিশুকে। বাইরের খাবার একেবারেই দেবেন না। আইসক্রিম বা ঠান্ডা পানীয় যেন না খায় শিশু। শিশুর শ্বাসকষ্ট বা ধুলো থেকে আলার্জি হলে রাস্তায় বেরোলে মাস্ক পরান অবশ্যই। যদি জ্বর হয় তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই ওষুধ খাওয়াবেন। নিজে থেকে অ্যান্টিবায়োটিক দেবেন না শিশুকে। জ্বর যদি তিন দিনের বেশি থাকে, তা হলে চিকিৎসককে দেখিয়ে নিতে হবে।