—প্রতীকী ছবি।
সরকারি ও সরকারপোষিত বিদ্যালয়, মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকারা গৃহশিক্ষকতা করতে পারবেন না বলে নির্দেশ রয়েছে শিক্ষা দফতরের। তবে সেই নির্দেশ অমান্য করে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা এখনও গৃহশিক্ষকতা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গৃহশিক্ষকতার পেশায় যুক্তদের একটি সংগঠনের (পশ্চিমবঙ্গ প্রাইভেট টিউটর্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন) কাছ থেকে এই মর্মে অভিযোগ পেয়ে মুর্শিদাবাদের ৮৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
জেলা শিক্ষা বিভাগ সূত্রে খবর, ওই নির্দেশ পাওয়ার পরে মুর্শিদাবাদ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অমরকুমার শীল বেশ কিছু অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের (এসআই অব স্কুল) কাছে ওই ৮৯ জন শিক্ষকের সম্পর্কে রিপোর্ট তলব করেছেন। তাঁরা গৃহশিক্ষকতায় যুক্ত কি না, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। রবিবার অমর বলেন, ‘‘মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আমাদের কাছে জেলার ৮৯ জন শিক্ষকের ব্যাপারে রিপোর্ট চেয়েছে। এসআইয়েরা রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
সূত্রের খবর, বহরমপুর সদর উত্তর ও দক্ষিণ, পূর্ব এবং পশ্চিম, সাগরদিঘি, কান্দি, রানিনগর ১ ও ২, ডোমকল এবং ডোমকল দক্ষিণ, খড়গ্রাম এবং খড়গ্রাম উত্তর, জলঙ্গি উত্তর, মুর্শিদাবাদ, সারগাছি, হরিহরপাড়া, জিয়াগঞ্জ এবং নবগ্রাম এসআইদের কাছে চার দিন আগে চিঠি গিয়েছে জেলা শিক্ষা বিভাগের তরফে। এই ১৮টি চক্রের ৮৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা বিভিন্ন সরকারি ও সরকার পোষিত বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তালিকায় সবচেয়ে বেশি নাম রয়েছে বহরমপুরের নামী কয়েকটি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। ৮৯ জনের মধ্যে বহরমপুর শহর ও শহর লাগোয়া এলাকার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ৪৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন বলেও খবর মিলেছে। তাঁরা সকলেই গৃহশিক্ষকতা করেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ নিয়ে বহরমপুরের গোরাবাজার আইসিআইয়ের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত দত্ত বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের কয়েক জন শিক্ষকের নাম তালিকায় রয়েছে বলে জানতে পারছি। তবে তাঁরা গৃহশিক্ষকতা করেন না বলে বছরখানেক আগে আমাকে লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন।’’ যদিও গৃহশিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের দাবি, তাঁরা গৃহশিক্ষকতা করতে চান না। অভিভাবকদের চাপে পড়েই অনেককে এতে যুক্ত থাকতে হচ্ছে। অভিভাবকদের একাংশের পাল্টা দাবি, অনেক স্কুলে পড়াশোনার মান খারাপ। তাই তাঁরা বাধ্য হয়ে সন্তানদের গৃহশিক্ষকের কাছে পাঠান। অভিভাবকদের একাংশ আবার গৃহশিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত স্কুলশিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর ক্ষুব্ধ। তাঁদের বক্তব্য, গৃহশিক্ষকতায় যুক্ত অনেক শিক্ষক সময়ে স্কুলে যান না। পড়ুয়াদের প্রতি তাঁদের দায়বদ্ধতাও কম। এতে স্কুলে পঠনপাঠনের মান দ্রুত নামছে।