আপ-ডাউনের ট্রেন আসার সময়ের গোলমাল শুরু হয় সন্ধ্যায়। ফাইল চিত্র।
আশঙ্কা সত্যি হল। বুধবার বিকেল থেকে চূড়ান্ত দুর্ভোগের শিকার হলেন শিয়ালদহ শাখার অফিসফেরতা ট্রেনযাত্রীরা। সময়ে ট্রেন তো ছাড়লই না। বেশ কিছু ট্রেনের ঘোষণাই হল না সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও। ফলে দিশাহারা যাত্রীরা নিরুপায় হয়ে কেউ কেউ প্ল্যাটফর্মেই দাঁড়িয়ে রইলেন পরবর্তী ঘোষণার অপেক্ষায়। কেউ আবার ট্রেনের আশা ছেড়ে বাসে বা অন্য উপায়ে বাড়ির পথ ধরলেন। তবে সব মিলিয়ে দুপুরের ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর যে ত্রাস ছড়িয়েছিল শিয়ালদহ শাখার যাত্রীদের মধ্যে। সেই আতঙ্কই ফিরে এল সন্ধ্যার শিয়ালদহ স্টেশনে।
ঘড়িতে তখন কাঁটায় কাঁটায় ৬টা। বেশ কয়েকটি ট্রেনের সময় পেরিয়ে গিয়েছে অনেক ক্ষণ। অফিসফেরত যাত্রীদের ভিড়ও জমতে শুরু করেছে স্টেশন চত্বরে। অথচ যাত্রীরা দেখলেন, স্টেশনের বোর্ডে শুধু দু’টি ট্রেনের সময়সূচি— একটি ৫টা ৪৬ মিনিটের বনগাঁ লোকাল। সেটি দাঁড়িয়েছিল ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। অন্যটি ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। ৫টা ৫৪ মিনিটের মাতৃভূমি রানাঘাট লোকাল। যদিও সময় পেরিয়ে গেলেও সেই দু’টি ট্রেন ছাড়েনি। পরে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় ট্রেন বিভ্রাটের কারণ। শোনা যায়, ডাউনের সমস্ত ট্রেন শিয়ালদহে এসে না পৌঁছনোয় আপে যাওয়ার ট্রেন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অফিসফেরতা যাত্রীদের দুর্ভোগের আসল কারণ সেটিই।
শিয়ালদহে এই ট্রেন বিভ্রাটের নেপথ্যে শিয়ালদহ স্টেশনের কাছে হওয়া দুপুরের ট্রেন দুর্ঘটনাই কারণ কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। কারণ রেল এ বিষয়ে কিছু জানায়নি। তবে অনুমান, যে হেতু সকালের দুর্ঘটনার জেরে দীর্ঘ ক্ষণ ট্রেন বন্ধ ছিল এবং বিভিন্ন স্টেশনে আটকে ছিল লোকাল ট্রেন, তাই ডাউনে শিয়ালদহ এসে পৌঁছতে দেরি হচ্ছে ট্রেনগুলির।
প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ শিয়ালদহ স্টেশনের কিছু আগেই কারশেডগামী একটি ফাঁকা ট্রেন এবং রানাঘাটগামী একটি যাত্রিবাহী ট্রেনের পাশাপাশি ধাক্কা লাগে। রেল প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারে, কারশেডের গাড়ির চালকের ভুলেই সিগন্যাল না মেনে এগিয়ে গিয়েছিল ট্রেনটি। তাতেই ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
দুপুরের ওই ঘটনার জেরে শিয়ালদহ শাখায় প্রায় দু’ঘণ্টা বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল। পরে অবশ্য লাইন থেকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত রেক সরিয়ে লাইন মেরামত করে আবার স্বাভাবিক পরিষেবা শুরু হয় বলে জানিয়েছিল রেল। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দুপুর ২টো ১০ মিনিটে শিয়ালদহ থেকে সমস্ত লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। ১, ২, ৩ এবং ৪ নম্বর লাইন দিয়ে শিয়ালদহে ট্রেন ঢোকা-বেরোনোয় কোনও সমস্যা নেই।’’ কিন্তু তার পর সন্ধ্যায় ফের ট্রেন সংক্রান্ত সমস্যা তৈরি হয়।