গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক-পড়ুয়ার খুন ও ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের আত্মপক্ষ সমর্থনের প্রথম পর্যায়ের সাক্ষ্য গ্রহণ করল শিয়ালদহ অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের আদালত। শুক্রবার দুপুর থেকে অভিযুক্তের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এই মামলায় সঞ্জয়-সহ মোট ৫১ জন সাক্ষী রয়েছেন। সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৫০ জন ইতিমধ্যেই সাক্ষ্য দিয়েছেন। বিচারক সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ যাচাই করবেন। তা ছাড়া সঞ্জয় যদি মামলা সংক্রান্ত নতুন কোনও তথ্য আদালতের সামনে পেশ করে, তা-ও শুনবেন বিচারক। সঞ্জয়ের কাছ থেকে তদন্ত প্রক্রিয়ার বাইরের কিছু তথ্য মিললে এবং তা গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে বিচারক তা নিয়েও ফের তদন্তের নির্দেশ দিতে পারেন। সঞ্জয় কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে বিচারক সমন পাঠিয়ে তাঁকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিতে পারেন এবং সঞ্জয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে নিজেই সরাসরি প্রশ্ন করতে পারেন।
কলকাতা পুলিশ সঞ্জয়কে অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার করার পরে ‘বায়োলজিক্যাল’ তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। মামলার চার্জ গঠন পর্বে ও বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন বেশ কয়েক বার আদালত থেকে যাতায়াতের পথে অভিযুক্ত সঞ্জয় নিজেকে 'নির্দোষ' বলে দাবি করে তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল। তাকে মুখ বন্ধ রাখার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে সঞ্জয়। কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং আরও কয়েক জন পুলিশকর্তা তাকে ফাঁসিয়েছেন বলেও অভিযোগ তুলেছিল সঞ্জয়।
আইনজীবীদের দাবি, কলকাতা পুলিশ ও সিবিআইয়ের হেফাজতে থাকাকালীন সঞ্জয়ের লিখিত বয়ান নেওয়া হয়েছে। বিশেষত খুন ও ধর্ষণে সে জড়িত নয় বলে সিবিআই হেফাজতে দাবি করেছে বলে
শোনা গিয়েছে। মামলার বিচার প্রক্রিয়ার প্রায় শেষ ধাপে বিচারক সঞ্জয়ের স্বীকারোক্তি এবং পাশাপাশি কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে তার অভিযোগ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখবেন। কলকাতা পুলিশ এবং সিবিআইয়ের কাছে দেওয়া সঞ্জয়ের লিখিত বয়ান পর্যবেক্ষণ করবেন বিচারক। আলিপুর আদালতের প্রাক্তন সরকারি আইনজীবী রাধাকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, "আইনের ধারা অনুযায়ী অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় নিজেকে নির্দোষ বা পরিস্থিতির শিকার বলে দাবি করে অন্য কোনও ব্যক্তির দিকে অভিযোগের আঙুল তুললে বিচারক তাকে ওই অভিযোগ প্রমাণ করার সুযোগ দিতে পারেন।’’
এ দিন সাক্ষ্য গ্রহণ পর্বে নিহত চিকিৎসকের বাবা-মা ও তাঁদের আইনজীবীরা আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন সিবিআইয়ের আইনজীবীরাও। এ দিন আদালত থেকে যাতায়াতের পথে সঞ্জয়ের কোনও মন্তব্য শোনা যায়নি। নিহত চিকিৎসকের মা-বাবাও কিছু বলেননি। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণ এবং সিবিআইয়ের আইনজীবীর সওয়াল জবাব ২ জানুয়ারি।