নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে যুব কংগ্রেসের বিক্ষোভ মিছিল।—নিজস্ব চিত্র।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের (সিএবি) প্রতিবাদে যুব কংগ্রেসের বিক্ষোভ মিছিল ঘিরে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াল রাজপথে। প্রথমে বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বচসা এবং বোতল ছোঁড়াছুঁড়ি হল যুব কংগ্রেস কর্মীদের। পরে ধস্তাধস্তি পুলিশের সঙ্গে। যুব কংগ্রেসের প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন বাম যুব সংগঠনের নেতারাও।
ডেঙ্গি ভয়ঙ্কর আকার নেওয়ার প্রেক্ষিতে কলকাতা পুরসভা অভিযানের ডাক দিয়েছিল প্রদেশ যুব কংগ্রেস। এর মধ্যে সংসদে সিএবি পাশ হয়ে যাওয়ায় ওই ‘অসাংবিধানিক’ পদক্ষেপের প্রতিবাদেই বৃহস্পতিবার রাস্তায় নামে তারা। মহম্মদ আলি পার্ক থেকে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ধরে পুরসভার দিকে এগোতে শুরু করে যুব কংগ্রেসের মিছিল। মুরলীধর সেন লেনে বিজেপির রাজ্য দফতরের দিকে ঢোকার পথ অবশ্য ব্যারিকেড করে আটকে রেখেছিল পুলিশ। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে মিছিল ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা পাল্টা স্লোগান দিচ্ছিলেন। মেডিক্যাল কলেজের সামনে যুব কংগ্রেসের মিছিল দাঁড়িয়ে পড়লে দু’পক্ষের বচসা, ধস্তাধস্তি বাধে। উড়ে আসে কিছু বোতল। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। যুব কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা সিএবি-র প্রতিলিপি পোড়ান।
পরে পুরসভার দিকে যাওয়ার পথে ই-মলের সামনে ব্যারিকেড করে যুব কংগ্রেসের মিছিল আটকে দেয় পুলিশই। খানিক ধস্তাধস্তির পরে ঘটনাস্থলে প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি শাদাব খান-সহ নেতা-কর্মীদের পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। মিছিলের শুরুতে ছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, বিধানসভায় বিরোধী দলের সচেতক মনোজ চক্রবর্তী, কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী, সুমন পালেরা। যুব কংগ্রেসের আমন্ত্রণে এসেছিলেন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সায়নদীপ মিত্র-সহ চারটি বাম যুব সংগঠনের নেতৃত্ব। অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘বিজেপির দফতর যে তৎপরতায় পাহারা দিল পুলিশ, আমাদের বিধান ভবনে বিজেপির হামলার দিনে তার কিছুই চোখে পড়েনি! পুলিশ সে দিন দাঁড়িয়ে ছিল।’’ রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেস আমাদের দফতরে সামনে মিছিল নিয়ে এসে প্ররোচনা তৈরি করেছিল। আমাদের সমর্থকেরা প্ররোচনায় পা দেননি। ওদের বাধা দিয়েছেন।’’
মিছিল শুরুর আগে মহম্মদ আলি পার্কে যুব কংগ্রেসের সভা। ছিলেন আব্দুল মান্নান, মনোজ চক্রবর্তী, অমিতাভ চক্রবর্তী, সুমন পাল প্রমুখরা।—নিজস্ব চিত্র
সন্ধ্যায় আবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী ছাত্রদের একাংশ মিছিল করে বিজেপি দফতরের দিকে আসেন। হিন্দু হস্টেলের কাছে পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়। সেখানেই তাঁরা সমস্বরে সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ করেন, সিএবি-র প্রতিলিপি পোড়ান। ব্যারিকেডের ও’পারে চলছিল বিজেপির পাল্টা স্লোগান।