উচ্চ মাধ্যমিকে প্রশ্নপত্রে উত্তর, আতান্তরে স্কুল 

২৫ সেপ্টেম্বর সংসদ এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, প্রশ্নপত্রেই উত্তর লেখার নিয়ম চালু করা হচ্ছে। নতুন ব্যবস্থার অন্যতম লক্ষ্য, প্রশ্ন ফাঁস প্রতিরোধ।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:০১
Share:

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ—ফাইল চিত্র।

আলাদা প্রশ্ন এবং আলাদা উত্তরপত্র আর নয়। আসন্ন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রেই উত্তর লিখতে হবে পড়ুয়াদের। এই নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

পুজোর ছুটির ঠিক আগেই নতুন পদ্ধতির কথা জানানো হয়। শিক্ষক শিবিরের অনুযোগ, ছাত্রছাত্রীরা পৃথক প্রশ্ন এবং পৃথক উত্তরপত্রেই অভ্যস্ত। নতুন নির্দেশের ফলে টেস্টের আগে বিষয়টি নিয়ে তালিম নেওয়ার বা অনুশীলন করার কোনও সুযোগই পেল না তারা। টেস্টে এই পদ্ধতির একটা মহড়া দেওয়া হবে। তবে সেই সব বুকলেট ছাপাতে গিয়ে অতিরিক্ত খরচের মুখে পড়ছে স্কুলগুলি।

২৫ সেপ্টেম্বর সংসদ এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, প্রশ্নপত্রেই উত্তর লেখার নিয়ম চালু করা হচ্ছে। নতুন ব্যবস্থার অন্যতম লক্ষ্য, প্রশ্ন ফাঁস প্রতিরোধ। টেস্টের মুখে এমন বিজ্ঞপ্তিতে বিপাকে পড়েছে স্কুলগুলি। ছোট করে নির্দিষ্ট সংখ্যক শব্দের মধ্যে বুকলেটে উত্তর লেখার তালিম আগে পায়নি পড়ুয়ারা। পুজোর ছুটির পরে স্কুল খোলার কিছু দিনের মধ্যেই টেস্ট। তাই টেস্টের আগে এই তালিম পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। টেস্টের পরেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে আর কোনও ক্লাসের সম্ভাবনা প্রায় নেই। এই পরিস্থিতিতে বিষম চিন্তায় পড়েছে স্কুলগুলি।

Advertisement

যাদবপুরে বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য মঙ্গলবার জানান, বুকলেট তৈরি করতে অতিরিক্ত খরচ তো হবেই। তা ছাড়া ছাত্রছাত্রীরা এ বিষয়ে কোনও তালিম পায়নি। পুরো বিষয়টি তাঁদের খুবই ভাবাচ্ছে। টেস্টে বুকলেটে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন তাঁরা। এই একটি পরীক্ষায় পড়ুয়ারা বিষয়টি কতটুকু আত্মস্থ করতে পারবে, সেই বিষয়েও তাঁরা চিন্তায় রয়েছেন। টেস্টের পরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের আর কোনও ক্লাস সাধারণত হয় না। তাই ভাল করে প্র্যাক্টিসের সম্ভাবনা খুবই কম। তিনি বলেন, ‘‘টেস্টে বুকলেটে পরীক্ষা দিয়ে ছাত্রছাত্রীরা যা শিখল, তার উপরে ভিত্তি করে উচ্চ মাধ্যমিকের আগে তাদের কিছুটা তালিম দেওয়া যায় কি না, আমরা সেটাও ভেবে দেখছি।’’

‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাসের বক্তব্য, সংসদের অনেক আগেই স্কুলগুলিকে জানানো উচিত ছিল। তা না-করে পুজোর ছুটির ঠিক আগে আগে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় স্কুলগুলিকে টেস্টে বুকলেটে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘সংসদ কেবল ইতিহাসের প্রশ্নের নমুনা তাদের ওয়েবসাইটে দিয়েছে। যার পাতার সংখ্যা ৪৮। সব বিষয়ে এমন বুকলেট ছাপতে অনেক খরচ পড়বে। সেই খরচ জোগাবে কে?’’

বিজেপি প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ও শিক্ষা বিষয়ক কর্মচারী সমিতির রাজ্য সভানেত্রী সঙ্ঘমিত্রা ভট্টাচাৰ্য বলেন, ‘‘সংসদের এমন আচমকা সিদ্ধান্তে সব থেকে বিপাকে পড়ল পড়ুয়ারা।’’ বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস ফোন ধরেননি। মেসেজ করা সত্ত্বেও তাঁর কাছ থেকে কোনও উত্তর আসেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement