ফাইল চিত্র।
দেশের সর্বত্র ১৫ অগস্টের পরে স্কুল-কলেজ খুলবে বলে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ নিশঙ্ক পোখরিয়াল রবিবার জানিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সোমবার জানান, কেন্দ্রের এমন কোনও নির্দেশ তাঁরা এখনও পাননি। এই অবস্থায় রাজ্যের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ জুন পর্যন্তই বন্ধ থাকবে। পরীক্ষা যেমন হওয়ার হবে। সেই ভাবেই এগোচ্ছেন তাঁরা। পঠনপাঠনের ঘাটতি পূরণের জন্য ডিসেম্বরের পরেও শিক্ষাবর্ষ কয়েক মাস বাড়ানো যায় কি না, সেই বিষয়েও চিন্তাভাবনা চলছে বলে বিকাশ ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে।
তবে এ দিনই কেন্দ্রীয় সচিবের সঙ্গে স্কুল খোলা নিয়ে রাজ্য শিক্ষা সচিবের কথা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘জুলাইয়ের প্রথমে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা (বাকি কয়েকটি বিষয়ে) আছে। সেই ব্যাপারে এ দিন বৈঠক হয়েছে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েও পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে। সে-দিকেও নজর রাখছি।’’ ১৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী আলোচনায় বসবেন।
প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, এ রাজ্যে ১০ জুন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে। পরে ঠিক হয়, ৩০ জুন পর্যন্ত সব স্কুল বন্ধ থাকবে। আরও পরে সিদ্ধান্ত হয়, ৩০ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ও। এরই মধ্যে পোখরিয়াল জানান, সম্ভবত ১৫ অগস্টের পরে দেশে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে। রাজ্যে প্রায় সাড়ে তিন মাস স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। স্কুলে সব বিষয়ের পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচি খানিকটা কমানোর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। তা কতটা সঙ্কুচিত করা হবে, সেই বিষয়ে আলোচনাও শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে পোখরিয়ালের ঘোষণায় পড়ুয়া ও অভিভাবকদের মধ্যে আবার উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। শিক্ষা শিবিরের বক্তব্য, দায়িত্বপ্রাপ্তদের পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচি বিষয়টি খুবই মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে। প্রথম সামেটিভে আড়াই মাস পঠনপাঠন হলেও এপ্রিলে লকডাউনের জন্য সেই পরীক্ষা হয়নি। দ্বিতীয় সামেটিভ অগস্টে হওয়ার কথা। কিন্তু ক্লাসই তো হয়নি। স্কুল খুলতে যদি ১৫ অগস্ট হয়ে যায়, তা হলে পঠনপাঠন এবং পরীক্ষা কী ভাবে হবে, সেই চিন্তাভাবনার দরকার আছে।
বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, এই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা আগে শুরু হয়েছে। ক্লাস হয়েছে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চের কিছু দিন। গরমের ছুটির সময় বাদ দিলে ক্লাস হয়নি দুই থেকে আড়াই মাস। এই সময়ে পঠনপাঠনের কতটা ক্ষতি হয়েছে, সেটা আগে বুঝতে হবে। তার পরে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। সময়াভাবে পাঠ্যক্রম যদি পুরোপুরি শেষ করা না-যায়, তা হলে পরবর্তী ক্লাসে প্রথমেই অসমাপ্ত অংশটি পড়িয়ে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির পরে কোনও পড়ুয়া যদি ফল খারাপ করে, তার জন্য ‘রিমেডিয়াল ক্লাস’-এর ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে। এর পরেও যদি দেখা যায় স্কুল খোলার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি, সে-ক্ষেত্রে ডিসেম্বরে শিক্ষাবর্ষ শেষ না-করে আরও কিছু মাস টেনে নিয়ে যাওয়া যায় কি না, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।