—নিজস্ব চিত্র।
সকাল হোক বা রাত, রাস্তাঘাটে বেরোলেই কোত্থেকে চলে আসে বাইক বাহিনী! টিউশনে যাওয়ার বা ফেরার সময়েও রাস্তায় ঘিরে ধরে গায়ে হাত দিয়ে ‘শ্লীলতাহানি’! প্রত্যেক দিন এক দল যুবকের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ হয়ে শেষমেশ পুলিশের দ্বারস্থ হল কয়েক জন স্কুলছাত্রী। দার্জিলিং জেলার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগর-২ পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা। এ বিষয়ে বিধাননগর থানায় লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে দার্জিলিঙের অতিরিক্ত সুপার অভিষেক রায় বলেন, ‘‘বিধাননগর থানায় একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শনিবার থেকে ওই এলাকায় পুলিশি টহলদারি শুরু হবে।’’
স্থানীয়দের অভিযোগ, সহদরগছ এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই শ্লীলতাহানির শিকার পাড়ার কিশোরীরা। বাইক বাহিনীর তাণ্ডবে তারা বাইরে বেরোতেই এখন ভয় পায়। অভিযোগ, ভোরে টিউশন নিতে যাওয়ার সময় বা রাতে টিউশন থেকে ফেরার সময় তাদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করা হচ্ছে। প্রতি দিন এই ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে। কয়েক জন বাইকে করে এসে ঘিরে ধরে মেয়েদের গায়ে হাত দিচ্ছে। তার পর বাইক নিয়েই চম্পট দিচ্ছে তারা। স্থানীয়দের দাবি, বিধাননগর থানায় এ নিয়ে আগেও অভিযোগ জানানো হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ কিছুই করেনি। কাজেই আরও সাহস পায় দুষ্কৃতীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা, পেশায় শিক্ষক শুভেন্দু সরকার বলেন, ‘‘এর আগেও আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। কিন্তু প্রমাণের অভাবে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলে জানিয়েছে। কিন্তু অনেক ছাত্রীর সঙ্গেই এই ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু জানাতে পারেনি। আগে সিসিটিভি ফুটেজে বিষয়টি ধরা পড়েছে। কিন্তু নম্বর প্লেট বোঝা যায়নি বলে কিছু করা যায়নি। এর একটা সমাধান হওয়া প্রয়োজন। এই পরিস্থিতির জন্য অনেক ছাত্রছাত্রী টিউশন নিতে যাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছে।’’
শুক্রবার থানায় অভিযোগ জমা দিতে গিয়ে এক ছাত্রী বলে, ‘‘ভয়ে টিউশন নিতে যেতে পারছি না। যখন তখন এই ঘটনা ঘটছে। বাইকে করে এসে খুব খারাপ ভাবে গায়ে হাত দিচ্ছে। পুলিশ বলছে প্রমাণ আনতে। আমরা কী ভাবে প্রমাণ আনব।’’ অন্য এক ছাত্রী বলে, ‘‘এক –দু’দিন আগেই আমাদের এক বান্ধবীর সঙ্গে এই ঘটনা ঘটে। সে প্রথমে আমাদের কিছু জানায়নি। বাড়ির লোককে সব বলেছে। আমরা এর সমাধান চাই। পঞ্চায়েত প্রধানকেও বিষয়টি জানিয়েছি।’’
এ বিষয়ে বিধাননগর-২ পঞ্চায়েতের প্রধান ঝর্না ঘোষ বলেন, ‘‘ছাত্রীরা এসেছিল আমার কাছে। তারা যে অভিযোগ করছে, সেটা মারাত্মক। কিন্তু এর আগে এই ধরনের ঘটনা শুনিনি। পুলিশ-প্রশাসনকেও অনুরোধ করেছি বিষয়টি খতিয়ে তদন্ত করার জন্য।’’