প্রতীকী ছবি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে বৃত্তিশিক্ষায় জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। অথচ যাঁরা সেই পাঠ দেন, সেই শিক্ষকদের একাংশের বেতন সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ। যাঁদের সাহায্য ছাড়া বৃত্তিশিক্ষা সম্পূর্ণ হয় না, সেই ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্টদের বেশ কয়েক জনের চাকরি গিয়েছে। ফলে ওই সব শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী পড়েছেন মহাসঙ্কটে। শুধু তা-ই নয়, নবপর্যায়ে স্কুল খোলার পরে নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত ক্লাস চলছে। কিন্তু বৃত্তিমূলক বিষয়গুলির পাঠ বন্ধ।
বৃত্তিমূলক শিক্ষার জন্য ন্যাশনাল স্কিল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক (এনসিকিউএফ)-এর অন্তত ১৫০০ শিক্ষক বেতন পাচ্ছেন না এবং ২৭৫ জন ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্টকে ছাঁটাই করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ফলে তাঁদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ওই শিক্ষকেরা যে-সব বিষয় পড়াচ্ছিলেন, সেগুলির পঠনপাঠন আপাতত বন্ধ বলে জানিয়েছে স্কুল।
এনসিকিউএফের শিক্ষকদের এজেন্সির মাধ্যমে বিভিন্ন সরকার পোষিত স্কুলে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়। তাঁদের বেতনও হয় এজেন্সির মাধ্যমে। রাজ্যের ৭২৬টি স্কুলে বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রম পড়ান তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গ এনসিকিউএফ শিক্ষা পরিবারের রাজ্য সম্পাদক শুভদীপ ভৌমিক জানান, রাজ্য সরকার এক দিকে বৃত্তিমূলক শিক্ষার উপরে জোর দিচ্ছে। মাধ্যমিক স্তরে ঐচ্ছিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে প্রধান বিষয়গুলির মধ্যে রাখা হয়েছে বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রমকে। উচ্চ মাধ্যমিকে বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রমের মধ্যে রয়েছে আইটি, প্লামিং, হেল্থকেয়ার, কনস্ট্রাকশন, টুরিজ়ম অ্যান্ড হসপিটালিটি, অটোমোবাইল। এই পাঠ্যক্রমের বড় অংশ পড়ান এনসিকিউএফ শিক্ষক এবং তাঁদের সহকারী ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্টরা।
শুভদীপবাবু বলেন, “আমাদের মূল দাবি ছিল, এজেন্সির মাধ্যমে বেতন নয়, আমাদের সরাসরি সরকারের আওতায় এনে স্থায়ী চাকরি দিতে হবে। সেটা তো হলই না, উল্টে ২৭৮ জন ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্টের চাকরিই চলে গেল। ১৫০০ শিক্ষক বেতন পাচ্ছেন না গত সেপ্টেম্বর থেকে। স্কুল খুলেছে, কিন্তু আমাদের সেখানে যাওয়ার অধিকার নেই।”
কারিগরি শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী হুমায়ুন কবির জানান, এনসিকিউএফ একটি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প। সেই প্রকল্পে চুক্তিতে নিযুক্ত এই সব শিক্ষক ও ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দফতরের আওতায় নেই। এজেন্সির মাধ্যমে ওঁদের নিয়োগ এবং বেতন হয়। হমায়ুন বলেন, “কেন্দ্রই ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্টদের মাসিক ভাতা বন্ধ করে দিয়েছে। তবে যে-সব শিক্ষক সেপ্টেম্বর থেকে বেতন পাচ্ছেন না, তাঁরা শীঘ্রই এজেন্সির মাধ্যমে তা পেয়ে যাবেন।” মন্ত্রী জানান, যে-সব শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতা ভাল, তাঁদের কারিগরি দফতরের অধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনও ভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।