ভোট-পরবর্তী হিংসার আশঙ্কায় রাজ্যে রেখে দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তারা থাকছে স্কুলেই। ছবি: পিটিআই।
নবান্ন থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো নির্দেশিকায় স্পষ্ট লেখা রয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু সেই কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা যাবে না। শিক্ষক মহলের একাংশের সংশয়, সত্যিই এখন ১০ দিন (বাহিনী যত দিন আছে) স্কুল খোলা থাকবে তো? থাকলে, বাহিনী থাকবে কোথায়? আর স্কুল বন্ধ হলে পাঠ্যক্রম শেষ হবে কী ভাবে?
সামনেই দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন। তার আগে পাঠ্যক্রম শেষ হবে না বলে আশঙ্কা বহু প্রধান শিক্ষকের। তাই সেই মূল্যায়ন পিছিয়ে দেওয়ারও দাবি উঠেছে।
গরমের ছুটির পরে স্কুল খুলেছিল ১৫ জুন। তার তিন সপ্তাহের মধ্যেই পঞ্চায়েত ভোটের জন্য বহু স্কুলে বন্ধ হয়েছে পঠনপাঠন। এখন ভোট পর্ব শেষ। কিন্তু, ভোট-পরবর্তী হিংসার আশঙ্কায় রাজ্যে রেখে দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তারা থাকছে স্কুলেই।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন শুরু হওয়ার কথা ১ অগস্ট থেকে। তা শেষ করতে হবে ৮ অগস্টের মধ্যে। কেন্দ্রীয় বাহিনী স্কুলে থাকলে, তার পরে পড়াশোনা কবে শুরু হবে, দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের পাঠ্যক্রম কী ভাবে শেষ হবে, সেটাই প্রশ্ন।
সোনারপুর পদ্মমণি গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা মৌমিতা সিনহা জানিয়েছেন, তাঁদের স্কুলে ভোটের বেশ কিছু দিন আগে থেকেই পুলিশ থাকছে। মৌমিতা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে সাত দিনের মতো স্কুল ছুটি ছিল। স্কুল খোলার পরে দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের জন্য পাঠ্যক্রম শেষ করার সময় পাওয়া খুবই কঠিন।’’ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদারের মতে, ‘‘যে সব স্কুলে ভোটের জিনিসপত্র প্রদানের কেন্দ্র হয়েছিল, সেগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটিকে ভোটের দ্বিতীয় প্রশিক্ষণকেন্দ্র করা হয়। এই স্কুলগুলি প্রায় ১৫ দিন বন্ধ। এখন কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার জন্য যদি আরও ১০ দিন বন্ধ থাকে, তা হলে দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের জন্য পড়াশোনা কখন হবে?’’
অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস এন্ড হেডমিস্ট্রেস-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে এখন কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। ভোটের সময়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী বা রাজ্য পুলিশ রাখার কাজে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে ব্যবহার না করাই ভাল। দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন অন্তত কয়েক সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ার জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে আবেদনও করা হচ্ছে।’’