বেথুন স্কুলে পরিদর্শক দল। ছবি:স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
স্কুলে পড়ুয়ার ঘাটতি মেটাতে উদ্যোগী হতে হবে শিক্ষকদেরই। শনিবার উত্তর কলকাতার বেশ কয়েকটি স্কুলে পরিদর্শন করে সচিব ও আধিকারিকদের একটি দল। সেখানেই এই পরামর্শ দিলেন তাঁরা। সেই সঙ্গে সমাজের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে স্কুলে পঠন পাঠনের পরিবেশ বজায় রাখারও পরামর্শ দিলেন স্কুল শিক্ষা সচিব মনীশ জৈন।
ইসলামপুরের দাড়িভিট হাই স্কুলের ঘটনার পরই স্কুল পরিদর্শন বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। কারন শিক্ষা দফতরের এক অংশের মতে ওই ঘটনাই প্রমাণ করে যে স্কুল পরিদর্শনে ঘাটতি রয়েছে। যেটা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন খোদ শিক্ষা মন্ত্ৰী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
এ দিন সকাল সাড়ে সাতটা থেকে উত্তর কলকাতার সরস্বতী বালিকা বিদ্যালয় দিয়ে পরিদর্শন শুরু হয়। তারপরে পাইকপাড়া কুমার আশুতোষ ইনস্টিটিউশনে যাওয়া হয়। সেখানে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলার পরে ডেকে নেওয়া হয় আশপাশের পড়ুয়াহীন কয়েকটি স্কুলের শিক্ষকদের। শহীদ স্মৃতি হাই স্কুল, সুভাষ মোড় পাঠশালা সহ চারটি স্কুলের শিক্ষকেরা আসেন। তাঁদের কাছে পড়ুয়াহীন হওয়ার ব্যাখ্যা চান সচিব।
স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, তাঁরা সচিবকে জানান এলাকাগুলিতে হিন্দি ভাষার মানুষ বেশি থাকেন। তাছাড়া বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের রমরমার কারনে পড়ুয়াহীন হয়ে গিয়েছে। সচিব পাল্টা জানান এই চিত্র এক দিনে হয়নি। এর আগে পড়ুয়াদের সংখ্যা বাড়াতে আদৌ কোনও পদক্ষেপ করা হয়েছে কিনা তা জানতে চান সচিব। ওই দলের এক সদস্য জানান, সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি শিক্ষকেরা। তার পর সচিব জানান, আশেপাশের প্রাথমিক স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। যাতে হাই স্কুলে ওঠার সময়ে তারা সরকারের এই সমস্ত স্কুলে ভর্তি হয়। কোন কোন পড়ুয়া এলাকায় রয়েছে খোঁজ রাখতে হবে তারও। এতদিন স্কুলছুট রুখতে পদক্ষেপ করত দফতর। এ বার পড়ুয়া আনতে ময়দানে নামতে হবে শিক্ষকদের। দফতরের এক কর্তা জানান, পরিকাঠামো সরকার দেবে। কিন্তু স্কুলে পঠন পাঠনের পরিবেশ বজায় রাখতে গেলে শিক্ষকদের দায়িত্ব নিতে হবে। এ দিন শ্রেণিকক্ষে পড়ুয়াদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন সচিব।
কি কারণে স্কুলে তাদের আসতে ইচ্ছে করে বা স্কুলে পড়াশোনার মান ভাল করতে কি করা যেতে পারে সে সব নিয়েও তাঁদের পরামর্শ চান সচিব। মিড ডে মিলও খেয়ে দেখেন ওই পরিদর্শনকারী দলটি। বেথুন স্কুল-সহ আরও কয়েকটি স্কুলে যায় ওই পরিদর্শকের দল। সেরা পড়ানোর পদ্ধতি, সেরা মিড ডে মিল বন্টন-সহ যে সমস্ত জিনিসকে ইতিবাচক বলে মনে হবে তার তালিকা তৈরি করে রাজ্যের সমস্ত স্কুলে সেটাকেই মডেল করা হবে বলে জানান ওই দলের সদস্য কার্তিক মান্না।