নাগরিক পরিষেবার জন্য পুরসভা করতে পারে অনেক কিছুই। কিন্তু বাস চালাতে পারে কি?
মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদে সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার পরে এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। জোরদার বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এ বার তাতে ইতি টানতে উদ্যোগী হয়েছে পরিবহণ দফতর। তারা কাটোয়া পুরসভার হাতে আর বাস চালানোর দায়িত্ব রাখতে রাজি নয় বলেই সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।
এসবিএসটিসি বা দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিহণ নিগমের কাছ থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে বাস চালায় কাটোয়া পুরসভা। কাটোয়া-কলকাতা, কাটোয়া-বর্ধমান এবং কাটোয়া-জয়রামবাটি— এই তিনটি রুটে পুরসভার বাস চলে। সেই তিন রুটেই পুরসভার বাস প্রত্যাহার করে নিতে চাইছে এসবিএসটিসি। তবে বিকল্প পরিকল্পনা তৈরির আগে পর্যন্ত ওই বাসগুলি পুরসভাই চালাবে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর। এসবিএসটিসি-র চেয়ারম্যান তমোনাশ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা খুব সম্ভবত বাস প্রত্যাহার করে নেব।’’ কবে এই তিন়টি বাস প্রত্যাহার করা হবে, তা অবশ্য এখনও স্থির হয়নি। সেগুলি প্রত্যাহারের আগে পর্যন্ত পরিবহণ দফতর থেকে নতুন যে-সব নিয়মকানুন চালু করার প্রক্রিয়া চলছে, তা মেনে চলার নির্দেশিকা পাঠানো হচ্ছে কাটোয়া পুরসভার কাছে। সেই নিয়ম অনুযায়ী এ বার বাসের গায়ে ‘পুরসভা পরিচালিত’ কথাটি উল্লেখ করতে হবে।
তৃণমূল পরিচালিত কাটোয়া পুরসভার চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা যে বাস চালাতে অপারগ, দৌলতাবাদের দুর্ঘটনার আগেই তা এসবিএসটিসি-কে জানিয়েছিলাম। আমাদের পরিকাঠামো নেই। এই অবস্থায় আমাদের পক্ষে বাস চালানো সম্ভব নয়।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, বাস খারাপ হয়ে গেলে মেরামতির জন্য দুর্গাপুরের গ্যারাজে পাঠাতে হয়। কাটোয়া পুরসভা এলাকায় একটি গ্যারাজ তৈরির জন্য জমি বাছাইয়ের কাজ চলছে। এসবিএসটিসি-কে তা জানিয়ে দিয়েছে পুরসভা। বছর দুয়েক আগে এসবিএসটিসি-র কাছ থেকে ১০টি বাস লিজ নেয় কাটোয়া পুরসভা। কিন্তু বছর ঘুরতেই দেখা যায়, বাসে ভিড় হলেও লোকসান হচ্ছে। তার পরেই পুর কর্তৃপক্ষ বাস কম চালানোর সিদ্ধান্ত নেন।
জানুয়ারির শেষে দৌলতাবাদে একটি যাত্রিবাহী বাস বিলে পড়ে যাওয়ায় প্রচুর প্রাণহানি ঘটে। পরে জানা যায়, বাসটি উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (এনবিএসটিসি)-এর কাছ থেকে লিজ নিয়েছিল বহরমপুর পুরসভা। দুর্ঘটনার পরে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে এনবিএসটিসি।