সরস্বতী প্রেস।—ছবি সংগৃহীত।
দাম। গুণগত মান। নিরাপত্তা। অভিজ্ঞতা। এই চার মানদণ্ডেই বাকিদের পিছনে ফেলে বাজিমাত করল সরস্বতী প্রেস। তাই বঙ্গের প্রথম রঙিন ভোটার পরিচয়পত্র (এপিক) তৈরির পুরো কাজ করবে তারা।
ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। ২৭ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করার কথা। সংশোধনী পর্বে বঙ্গে নতুন ভোটার হতে প্রায় ২৭ লক্ষ আবেদন পড়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৮৩-৮৬ শতাংশ আবেদন গ্রাহ্য হয়েছে। নথিপত্রের অভাবে বাকিদের আবেদন বাতিল হতে পারে। বিনামূল্যেই পলি ভিনাইল ক্লোরাইড (পিভিসি) কার্ড বা রঙিন ভোটার পরিচয়পত্র হাতে পাবেন নতুন ভোটারেরা। এর পাশাপাশি সংশোধনের জন্য আবেদন জমা পড়েছে ৪২-৪৪ লক্ষের মতো। সংশোধনের পরে রঙিন ভোটার কার্ড হাতে পাবেন আবেদনকারীরা। সংশোধিত কার্ডের জন্য আগের মতোই ২৫ টাকা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট ভোটারকে। নতুন ভোটারদের বরাবরই বিনামূল্যে কার্ড দেওয়া হয়।
এখন ভোটার পরিচয়পত্র তৈরি করে জেলা প্রশাসন। রঙিন কার্ডের ক্ষেত্রে প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, নির্বাচন কমিশন, লোগো-সহ নিয়মের (নন-পার্সোনালইজ়ড পিভিসি প্রিন্ট) কথা ছাপাবে রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের (সিইও) দফতর। তার পরে সেগুলো জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দেবে তারা। ব্যক্তিগত (পার্সোনালইজ়ড) তথ্য সেই কার্ডের উপরে ছাপিয়ে দেবে জেলা প্রশাসন।
এখন সেই সিদ্ধান্তে বদল হয়েছে, দু’দফায় কার্ড তৈরি হলেও পুরো কাজটাই করবে সরস্বতী প্রেস। এ ক্ষেত্রে প্রতি জেলা থেকে এক জন করে নোডাল অফিসার থাকবেন। যিনি জেলার সব ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও), সিইও দফতর এবং সরস্বতী প্রেসের সঙ্গে সমন্বয় রাখবেন। কলকাতার ক্ষেত্রে অবশ্য এই সমন্বয়ের জন্য একাধিক অফিসার থাকবেন।
সিদ্ধান্তে বদল কেন?
প্রথমত, শুধু ব্যক্তিগত তথ্য ছাপাতে কম করেও সাত-আট টাকা খরচ করতে হত কোনও কোনও জেলা প্রশাসনকে। সেই তুলনায় সরস্বতী প্রেস অর্ধেকের কম দামে ওই কাজ করে দেবে। কোনও কোনও জেলায় একই কাজের জন্য ১৭-১৮ টাকা খরচ করতে হত। দ্বিতীয়ত, গুণগত মানের ক্ষেত্রে সরস্বতী প্রেস এগিয়ে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি। তৃতীয়ত, সরস্বতী প্রেসে ইভিএম বা বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে থাকা ব্যালট পেপার ও পোস্টাল ব্যালট ছাপা হয়। ফলে ভোটের কাজ সম্পর্কে তারা অনেক বেশি সচেতন। চতুর্থত, সরস্বতী প্রেসে নিরাপত্তা অন্যান্য জায়গার তুলনায় অনেক বেশি।
চার মানদণ্ডে অনেক এগিয়ে আছে বলেই বঙ্গের প্রথম ভোটার রঙিন পরিচয়পত্রের পুরো কাজ করবে সরস্বতী প্রেস। বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছে সিইও-র দফতর।
এখনকার ভোটার পরিচয়পত্রে হলোগ্রাম থাকে। রঙিন পরিচয়পত্রে তা থাকছে না। পরিবর্তে তাতে থাকবে একটি অদৃশ্য (ইনভিজ়িবল) নম্বর। যা কমিশনের পক্ষে দেখা সম্ভব হবে। এ ছাড়া পুরনো কার্ডের মতো নতুন রঙিন পরিচয়পত্রেও থাকবে নাম, সম্পর্ক-নাম, লিঙ্গ, বয়স এবং ঠিকানা। পরিচয়পত্রের বারকোডের মধ্যে ভোটারের যাবতীয় তথ্য থাকবে বলে জানাচ্ছে নির্বাচন কমিশন।