২৫ জুনের কর্মসূচি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। — নিজস্ব চিত্র।
মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) নিয়ে আন্দোলন চলছিলই। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে সরকারি কর্মচারীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সমাবেশের ডাক দিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। মঙ্গলবার শহিদ মিনারের ধর্না মঞ্চে সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিলেন তাঁরা। সংগঠনের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘‘এটা অত্যন্ত লজ্জার যে ন্যায্য অধিকার পাওয়ার জন্য সরকারি কর্মচারীদের ধর্না দিতে হচ্ছে। আমাদের ধর্নার ১৫০তম দিন উপলক্ষ্যে আগামী ২৫ জুন কলকাতায় জোড়া মিছিল হবে। সঙ্গে একটি সমাবেশও হবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে।’’ তবে বিরোধী সংগঠনের পাল্টা তৃণমূল কর্মচারী ফেডারেশন সুষ্ঠু ভাবে ভোট করাতে সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে আক্রমণ শানিয়েছে এই কর্মসূচিকে।
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, ২৫ জুন হাওড়া এবং শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করবেন তাঁরা। পরে ওই দিনই শহিদ মিনারে একটি জনসভাও করবেন। এর আগে ৫ মার্চ ও ৩০ এপ্রিল শহিদ মিনারে ডিএ-র দাবিতে সভা করেছিলেন তাঁরা। পাশাপাশি, ৬ মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরের হাজরা মোড়েও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছিলেন। প্রত্যেক সভাতেই হাজির হয়ে তাঁদের ডিএ-র দাবিকে যুক্তিযুক্ত বলে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এবং কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানরা।
কিন্তু আগামী ২৫ জুনের সমাবেশে ডিএ-র দাবির সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটে সরকারি কর্মচারীদের সুরক্ষার দাবিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার জন্য সরব হবেন তাঁরা। উল্লেখ্য, শহিদ মিনারের যৌথ মঞ্চের ধর্না মঙ্গলবার ১৩৮তম দিনে পা দিল। সংগঠনের আহ্বায়ক ভাস্কর বলেন, ‘‘আগামী পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সুরক্ষা ছাড়া এই রাজ্যের শিক্ষক কর্মচারীরা ভোটের কাজে যাবেন না। এই দাবির সঙ্গে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা প্রদান ছাড়াও, সমস্ত শূন্য পদে স্বচ্ছ ভাবে স্থায়ী নিয়োগ এবং অস্থায়ীদের স্থায়ীকরণের সঙ্গে প্রতিহিংসামূলক বদলি বন্ধ করার দাবিতে আমাদের মিছিল এবং সমাবেশ হবে।’’
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের দাবি, কলকাতা হাইকোর্টে ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকারকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। রাজ্য সরকার বার বার অস্থায়ী কর্মীদের দিয়ে ভোট পরিচালনার কথা বলেছেন। কিন্তু আইন বিরুদ্ধ ভাবে যে কাজ করা যায় না, কলকাতা হাইকোর্ট বুঝিয়ে দিয়েছে। তাই বোঝা যাচ্ছে, মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষায় স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা ছাড়া উপায় নেই। তাঁদের আরও দাবি, রাজ্যের প্রায় ৭০ হাজার বুথ রয়েছে, আর পুলিশকর্মী মাত্র ৪৪ হাজার। ২টি বুথপিছু এক জন করে পুলিশ নিয়োগ করার পরিস্থিতি নেই।
এই কর্মসূচির পাল্টা জবাবে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা প্রতাপ নায়েক বলেন, ‘‘সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসের ভাষায় কথা বলছে। সরকারি কর্মচারীদের কখনওই বিরোধী রাজনৈতিক দলের মতো আচরণ করা উচিত নয়। আমরা তো আর এই প্রথম ভোট করাতে যাচ্ছি না। আর সরকারি চাকরি করতে এলে এই সব দায়িত্ব পালন করতেই হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সরকার যখন আমাদের ভোটের কাজে পাঠাচ্ছে, তখন আমাদের সুরক্ষার কথা সরকারের মাথায় রয়েছে। রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা উন্নয়ন এবং প্রগতির সঙ্গে রয়েছেন। তাই কে বা কারা কী কথা বলছেন আমার জানা নেই। আমাদের ধারণা সব সরকারি কর্মচারীরা ভোটের কাজ করতে যাবেন।’’