শেখ সুফিয়ান। ফাইল চিত্র।
গত বিধানসভা ভোটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন তিনি। সেই শেখ সুফিয়ানই নন্দীগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনার কমিটি থেকে এ বার বাদ পড়েছেন। তার পরেই টিকিট না পাওয়ার আশঙ্কায় তৃণমূলের তালিকা প্রকাশের আগেই সুফিয়ান গোষ্ঠীর লোকজন মনোনয়ন দেওয়া শুরু করেছেন।
সোমবার পর্যন্ত নন্দীগ্রামের সামসাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮টি গ্রাম সংসদের মধ্যে ১০টিতে, দাউদপুর পঞ্চায়েতের ১৭টি সংসদের সব ক’টিতে এবং কেন্দেমারি পঞ্চায়েতের ২২টি আসনের ১৯টিতেই তৃণমূলের ‘বিদ্রোহীরা’ মনোনয়ন দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া দাউদপুরের বিদায়ী পঞ্চায়েত সদস্য আব্বাস বেগ বলছেন, ‘‘ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গের লক্ষ্য হল সুফিয়ান ও তাঁর অনুগামীদের উচ্ছেদ করা। আমরা জেনেছি ওঁরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে নিজেদের লোকেদের প্রার্থী করছে। তাই আমরাও মঞ্চ তৈরি করে নন্দীগ্রামের গণতন্ত্র ও তৃণমূলকে বাঁচাতে চাইছি।’’ তাঁর দাবি, ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের সব আসনেই বিদ্রোহী প্রার্থীরা থাকবেন। আর এক বিদ্রোহী নেতা, সামসাবাদ অঞ্চলের প্রাক্তন সভাপতি সুনীল মাইতির কথায়, ‘‘দলকে কিছু দালাল আর কাটমানি-খোরের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত মানব না।’’ ২০১৩ সালে এখানে নির্দলরা বোর্ড গড়েছিলেন। পরে তাঁরা তৃণমূলে ফেরেন।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা এলাকায় এ বার প্রথম দিন থেকেই পদ্ম-প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে শুরু করেছেন। তবে তৃণমূলের প্রার্থী-তালিকা এখনও ঘোষণা করা হয়নি। প্রার্থী বাছাই থেকে মনোনয়নের প্রস্তুতিতে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে তৃণমূলের নির্বাচনী কমিটিতেও সুফিয়ান এবং প্রাক্তন ব্লক সভাপতি স্বদেশরঞ্জন দাস নেই। অথচ সুফিয়ান পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বিদায়ী সহ-সভাধিপতি। তাঁর অভিমান, ‘‘নন্দীগ্রামে যখন তৃণমূল ছিল না, তখন আমাদের প্রয়োজন ছিল। বর্তমানে যারা দলটাকে নতুন করে নিয়ে আসবে ভাবছে, তাদের নিয়ে আর কিছু বলার নেই।’’ স্বদেশ বলছেন, ‘‘ব্লকে কী হচ্ছে, বুঝতে পারছি না। তাই বাড়িতেই চুপচাপ বসে আছি।’’
নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা তথা বিপেজির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি প্রলয় পাল এ প্রসঙ্গে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণার পর বিদ্রোহী প্রার্থীর তালিকা আরও লম্বা হবে।’’ ব্লক তৃণমূল সভাপতি বাপ্পাদিত্য ফোন ধরেননি। তবে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘মঙ্গলবার আমাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে। তার আগে কেউ মনোনয়ন জমা দিলে তার দায়ভারও তাঁকেই নিতে হবে।’’