শাহজাহান শেখ (বাঁ দিকে) এবং রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। —ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালি থানায় সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের আগেই কি এফআইআর হয়ে গিয়েছিল? এই বিতর্কে এ বার মুখ খুললেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ)। তিনি বলেন, “আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই তারিখ লেখায় ভুল হয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই এটা অনিচ্ছাকৃত। হিউম্যান এরর। এর মধ্যে কোনও অসৎ উদ্দেশ্য বা অভিসন্ধি ছিল না। তার সপক্ষে আমাদের যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।” একই সঙ্গে এডিজি জানান, হাই কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক এই বিষয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করবেন পুলিশ সুপার (এসপি)। প্রসঙ্গত, প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদের জামিনের মামলায় মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে ‘ভর্ৎসিত’ হতে হয়েছিল সন্দেশখালি থানার পুলিশকে। অভিযোগ দায়েরের আগের দিন কী ভাবে এফআইআর করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল আদালত।
বৃহস্পতিবার সুপ্রতিম বলেন, “সংবাদমাধ্যমে লাগাতার বলা হয়েছে পুলিশ ইচ্ছাকৃত ভাবে শাহজাহানকে গ্রেফতার করছে না। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটা ঠিক নয়। এটা ভুল। এটা অপপ্রচার। আমাদের আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল। দিন দুয়েক আগে যখন মাননীয় উচ্চ আদালতের তরফে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয় যে গ্রেফতারির উপরে কোনও বিধিনিষেধ নেই, তখন আমরা জোরকদমে তল্লাশি শুরু করি। গত রাতে মিনাখাঁ থানার বামনপুকুর অঞ্চল থেকে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করি।”
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার জানান, সন্দেশখালিতে অনেক ধরনের মানুষ আসছেন। তাঁদের কাছে পুলিশের তরফে তাঁর আর্জি, “এমন কিছু করবেন না, যাতে এলাকায় বিভেদ সৃষ্টি হয়।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “জনপ্রতিনিধিদের কেউ কেউ পুলিশের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক, উস্কানিমূলক, প্ররোচনামূলক মন্তব্য করছেন। করেছেন। এমন কিছু মন্তব্য করা হয়েছে যাতে মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত লাগে এবং যাতে একটি ভেদাভেদের বাতাবরণ তৈরি হয়। এটা আমাদের কাছে অত্যন্ত পীড়াদায়ক। নিন্দনীয় তো বটেই।” একই সঙ্গে পুলিশের অন্যতম এই শীর্ষকর্তা বলেন, “জনপ্রতিনিধিদের একাংশ ভবিষ্যতে এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবেন, যাতে মানুষে মানুষে কোনও বিভেদ তৈরি না হয়।”
সুপ্রতিম জানালেন, ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯-সহ একাধিক ধারায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রাজ্য পুলিশের বাধ্যবাধকতা থাকলেও ইডি শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে উদ্যোগী হল না কেন? প্রশ্ন তুললেন এডিজি সুপ্রতিম।
সুপ্রতিম সরকার বললেন, “তদন্তের স্বার্থে আমরা এই বিষয়টি জানাতে চাইছি না। যা বলার আদালতকে বলব।”
শাহজাহানকে গ্রেফতারে আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল। আদালত স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার পর গত রাতে মিনাখাঁ থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়: এডিজি
মিনাখাঁ থানার বামনপুকুর থেকে গ্রেফতার শাহজাহান। জানালেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার।
৫৫ দিনের টালবাহানার অবসান। অবশেষে মিনাখাঁ থেকে গ্রেফতার হলেন সন্দেশখালির ‘নিখোঁজ’ তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ। দাবি পুলিশ সূত্রে। তাঁকে বসিরহাট আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, আদালতের লকআপে রাখা হয়েছে তাঁকে। বৃহস্পতিবারই তাঁকে আদালতে হাজির করানো হবে। সকাল ৯টায় মিনাখাঁ থানায় সাংবাদিক বৈঠক করলেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার।