ডুডুয়া নদী থেকে চলছে অবৈধ বালিপাচার।
সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে চলছে বালি পাচার। অথচ তা বন্ধ করতে পারেনি প্রশাসন। ধূপগুড়ি এবং ফালাকাটার মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে ডুডুয়া নদী। সেই নদী থেকেই জেসিবি লাগিয়ে তোলা হচ্ছে বালি। সেই বালি ডাম্পার, ট্রলি এবং ট্রাকে চলে যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। যদিও ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর সূত্রে খবর, ডুডুয়া নদী থেকে বালি তোলার সরকারি কোনও অনুমতি নেই।
স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান সুশীল কুমার রায় বলেন, ‘‘ডুডুয়া নদী থেকে বালি তোলার বিষয়টি জানি না। এর আগে ডুডুয়া নদী থেকে বালি পাচারের ব্যাপারে ভূমি রাজস্ব আধিকারিকদের জানানো হয়েছিল এবং অভিযানও চালানো হয়েছিল। হয়তো এখন আবারও বালি পাচার শুরু হয়েছে।’’
ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ডুডুয়া নদী থেকে বালি তোলার লিজ দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া লিজ দেওয়া হলেও জেসিবি বা মেক্যানিক্যাল জিনিসপত্র ব্যবহার করা যায় না। এটা বন্ধ করতে গেলে আমাদের আরও পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগিতা প্রয়োজন।’’ উল্লেখ্য সম্প্রতি শালবাড়িতে বালি পাচারের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক।
আরও পড়ুন: ভয়ে আমার নাম বলে না বিজেপি, ভাইপো বলে ডাকে, তোপ অভিষেকের
তবে, স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, একটি অসাধু চক্র মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এই অবৈধ বালির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সেই টাকার ভাগ পুলিশের কাছেও যাচ্ছে। কারণ, পুলিশের নাকের ডগায় চলছে বেআইনি বালি পাচার। অথচ বালি পাচার বন্ধে উদ্যোগ নেই প্রশাসনের। পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগায় কী ভাবে নদীর বুক থেকে জেসিবি বসিয়ে নদীর বুক খালি করা হচ্ছে সেই বিষয়ে প্রশ্ন তুলছেন এলাকাবাসীরাও।
আরও পড়ুন: ঘর গোছাতে ডিসেম্বর থেকে ময়দানে নামছেন মমতা, একগুচ্ছ কর্মসূচি
স্থানীয় বাসিন্দা কালা দে বলেন, ‘‘সব কিছু ফিটিং করা আছে। টাকার বিনিময়েই সব হচ্ছে। সব নদী থেকেই অবৈধভাবে বালি পাচার চলছে।’’ স্থানীয়দের বক্তব্য, লক্ষ লক্ষ টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নদী থেকে চলছে বালি পাচার, অথচ তা বন্ধ করতে ব্যর্থ পুলিশ।
এ বিষয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, ‘‘বালি খাদান, মাটি খাদানের বিষয়ে তৃণমূলের বুথ স্তর থেকে রাজ্য নেতারা জড়িত। এটা সবাই জানে। এতে সমস্ত প্রশাসনের কর্মকর্তারাও জড়িত।’’ তিনি আরও দাবি করেন, বালি পাচারের ভাগের টাকা তৃণমূল পায়নি বলেই একসময় মাল থানার ওসিকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল।
অথচ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, এমনকি পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব অবৈধভাবে বালি পাচারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিন এবং হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘জেলাশাসককে অবৈধ বালি পাচার আটকাতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি। কিন্তু তারপরেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বালিপাচার চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’