উত্তরীয় পরিয়ে সলমন খানকে নিজের বাড়িতে স্বাগত জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
ভিড়ে ভিড়াক্কার কালীঘাটের রাস্তা পেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে পা রাখলেন সলমন খান। যদিও নিরাপত্তার খাতিরে ভিড় জমানো জনতাকে সুপারস্টারের কাছেপিঠে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। শনিবার বিকেলে হরিশ চ্যাটার্জি রোডের বাড়িতে তাঁকে স্বাগত জানান মমতা। ক্রমাগত প্রাণনাশের হুমকি পাওয়া ভাইজানের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি যে চিন্তিত, তা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শনিবার দুপুর থেকেই হরিশ চ্যাটার্জি রোডের দিকে সলমন-ভক্তদের ভিড় বাড়ছিল। বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে পুলিশি নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে আসেন সলমন। পরনে আকাশি জিন্স এবং একই রঙের ফ্যাকাশে শার্ট। তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানান মমতা।
ভাইজানকে এক ঝলক দেখার অপেক্ষায় তত ক্ষণে ভিড় উপচে পড়েছে হরিশ চ্যাটার্জি রোডে মমতার বাড়ির আশপাশে। কোথাও সলমনের প্রমাণসাইজের কাটআউট, তাতে মালা পরিয়ে সুপারস্টারকে স্বাগত জানাচ্ছেন ভক্তেরা। অনেকে আবার মোবাইল ক্যামেরা তাক করে অপেক্ষায় ছিলেন, কখন তাঁদের নায়কের দেখা মিলবে। নায়কের ‘দর্শন’ পেতে কালীঘাটে হাজির হয়েছিলেন নেতাজিনগর সলমন খান ফ্যান ক্লাবের সদস্যেরাও। উজ্জয়ন চৌধুরী নামে ক্লাবের এক সদস্য বলেন, ‘‘সলমন খানকে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবেও দেখব। ওঁকে কালীঘাটেও দেখব।’’
নায়কের প্রমাণসাইজের কাটআউট টাঙিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন ভক্তেরা —নিজস্ব চিত্র।
বিকেলে কালীঘাটের পর ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শতবর্ষ উপলক্ষে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানমঞ্চ মাতাবেন সলমন। ১৩ বছর পর কলকাতায় আসা সলমনকে ওই মঞ্চে সংবর্ধনা দেবেন ইস্টবেঙ্গলের কর্তারা। সে মঞ্চ মাতাতে সলমনের সঙ্গে বলিউডের একগুচ্ছ তারকার থাকার কথা।
শনিবার সলমনের নিরাপত্তায় খামতি রাখেনি কলকাতা পুলিশ। দক্ষিণ কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পা রাখার আগে এই এলাকায় অবাঞ্ছিত লোকজনের যাতায়াত নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। গোটা এলাকা নিরাপত্তায় মুড়ে রাখা হলেও ভিড়ের উন্মাদনা দমানো যায়নি। পুলিশের কনভয়ের দ্বিতীয় গাড়িতে করে কালীঘাটের রাস্তা পেরিয়ে হরিশ মুখার্জি রোডের দিকে এগোনোর ফাঁকে ভক্তদের ইচ্ছাপূরণ করেছেন সলমন। গাড়ি থেকে নেমে তাঁদের দিকে হাত নেড়েছেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দীর্ঘ দিনের দেহরক্ষী শেরা। ছিলেন সোনাক্ষী সিন্হাও। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অনুষ্ঠানে সলমন, সোনাক্ষীর সঙ্গে দেখা যেতে পারে জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ়, প্রভু দেবা, আয়ুষ শর্মাদের।
পঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসে ওয়ালা খুন হওয়ার পর থেকেই প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন সলমন। গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের দল তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার পর থেকেই নিরাপত্তার বহর বেড়েছে। মুম্বই পুলিশের কাছ থেকে ওয়াই প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান তিনি। তবে সলমনের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার নিজের বাড়িতে সলমনের সঙ্গে প্রায় ৪০ মিনিট বৈঠক করেন। বিকেল ৫টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরোন সলমন। এর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতার মন্তব্য, ‘‘ওঁর নিরাপত্তা নিয়ে আমি চিন্তিত।’’