সাগরিকা পল্লবী বাসে কন্ডাক্টরের কাজ করছেন। নিজস্ব চিত্র
যিনি রাঁধেন তিনি চুলও বাঁধেন। অতি প্রচলিত এই কথাটিকে আবারও সত্যি প্রমাণ করলেন সাগরিকা পল্লবী। সাগরিকা ওরফে সোনাই একটি দূরপাল্লার বাসে কন্ডাক্টরি করেন। রসায়নে স্নাতক সাগরিকা মনের জোরে গর্বের সঙ্গে কাঁধে তুলে নিয়েছেন কন্ডাক্টরের ব্যাগ।
চন্দ্রকোনা থেকে কলকাতা পর্যন্ত দূরপাল্লার বাসে কন্ডাক্টরের কাজ করেন সাগরিকা। কয়েক মাস আগে স্বাবলম্বী হওয়ার লক্ষ্যে একটি বাস কেনেন সাগরিকা। শুরু করেন পরিবহণ ব্যবসা। এখন ওই বাসটি চন্দ্রকোনা থেকে কলকাতা স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করছে। তাতেই কন্ডাক্টরি করেন সাগরিকা। এই কাজে তিনি পাশে পেয়েছেন তাঁর স্বামীকেও।
মহিলা হয়ে বাসের কন্ডাক্টর, পরিবারের লোকেরা মেনে নিল? সাগরিকার কথায়, ‘‘শুরুতে এই কাজ মেনে নিতে পারেননি পরিবারের অনেকেই। কিন্তু পরে তাঁরা বুঝতে পেরেছেন কোনও কাজই ছোট নয়। তা ছাড়া সৎ পথে উপার্জন তো কোনও অন্যায় নয়।’’
প্রতি দিন রাত ৩টের সময় ঘুম থেকে উঠে প্রস্তুত হতে হয়। কাঁধে কন্ডাক্টরি ব্যাগ নিয়ে ভোর ৫টার আগে পৌঁছে যেতে হয় চন্দ্রকোনা টাউন কেন্দ্রীয় বাস স্ট্যান্ডে। তার পর ভোর সওয়া ৫টা নাগাদ বাস রওনা হয় কলকাতার উদ্দেশে। তখন থেকেই শুরু হয় সাগরিকার কাজ।
বাস কেনার শুরুতে অবশ্য সাগরিকা এই কাজ করতেন না। অন্য কন্ডাক্টর দিয়ে কাজ করানোয় খরচও হত বেশি। এখন নিজের হাতে সবটা দেখভাল করেন সাগরিকা। তাঁর এই কাজ নিয়ে ঘাটাল তৃণমূল পরিবহণের নেতা মেহের আলি খান বলেন, ‘‘জেলায় প্রথম এক মহিলা বাস কন্ডাক্টরের কাজ করছেন। আগামিদিনে যদি আরও মহিলা এই কাজে আসতে চান তা হলে তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব।’’