বিদ্যুৎ ভবনের বিক্ষোভ-সভায় সব্যসাচী দত্ত। শুক্রবার। —ফাইল চিত্র।
বিদ্যুৎ ভবনের কর্মীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সব্যসাচী দত্ত বিক্ষোভ দেখানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিধাননগরের কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক ডাকলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। লক্ষ্যণীয় ভাবে বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচীই ওই বৈঠকে ডাক পাননি। আজ, রবিবার দুপুরে তৃণমূল ভবনের ওই বৈঠকে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে দলীয় স্তরে পদক্ষেপ শুরু হতে পারে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
সব্যসাচীর একের পর এক ‘দলবিরোধী’ কার্যকলাপ আর যে দল বরদাস্ত করবে না, তা শুক্রবার রাতেই তৃণমূলের শীর্ষ স্তর থেকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল। দলীয় শৃঙ্খলার স্বার্থে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে চান শীর্ষ নেতৃত্ব। এই প্রেক্ষাপটে আজকের বৈঠককে মেয়র সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার প্রস্তুতি বলেও দলের অন্দরে মনে করা হচ্ছে। সব্যসাচী সম্পর্কে দলের মনোভাব স্পষ্ট করে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ শনিবার বলেন, ‘‘উনি যা করেছেন, তা অন্যায়। দলে থাকতে গেলে দলের অনুশাসন, একতা, আনুগত্য মেনে যে চলতে হবে, এটা মনে রাখতে হবে ওঁকে। দলে থেকে দলবিরোধী কথা বলা এবং দল-বিরোধীদের সঙ্গে নেমন্তন্ন খাওয়া কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। যাঁরা এই অনুশাসন মেনে চলতে পারবেন না, তাঁদের দলে থাকার দরকার নেই।’’
যদিও সব্যসাচী নিজে বলছেন, ‘‘আমি এখনও এ ধরনের কোনও বৈঠকের কথা জানি না। আমায় কেউ বলেওনি। দল ডাকলে ভাবব, কী করব।’’ অনাস্থার প্রস্তুতি, ‘‘এ নিয়ে এখনই কিছু বলব না। বৃষ্টিতে বেরনোর আগে ঠিক করব ছাতা না রেনকোট নেব।’’
সব্যসাচী বিধায়ক। তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করার ভাবনাও শুরু হয়েছে বলে খবর। তবে সমান্তরাল ভাবে ভাবা হচ্ছে, দল থেকে সাসপেন্ড হয়েও যদি সব্যসাচী বিধায়ক থেকে যান, তা হলে সেই ‘শাস্তি’ খুব একটা যুক্তিগ্রাহ্য হবে না। সে ক্ষেত্রে মেয়র পদে অনাস্থা আনা যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে দলে। সব্যসাচীর পক্ষে-বিপক্ষে কাউন্সিলরদের কত জন, সেই জল মাপতেই আজ বৈঠক বলে মনে করছেন দলের একাংশও।
অনাস্থায় সব্যসাচী সরে গেলে মেয়র পদের জন্য ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়ের নামও ঘোরাফেরা করছে। তাপসবাবু তৃণমূলের প্রভাবশালী অংশের ‘আস্থাভাজন’ বলে পরিচিত। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর স্নেহভাজন বিধাননগরের বর্তমান চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর নামও জল্পনায় রয়েছে। আরও একটি বিকল্প হিসেবে বিধাননগরে প্রশাসক বসানোর ভাবনাও রয়েছে শাসক দলে।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যের সব পুরসভায় ভোট হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে দল ও প্রশাসনিক জটিলতা এড়াতে এই পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হবে, তা-ও দলীয় নেতৃত্ব বিবেচনা করছেন। তবে কোন পথ নেওয়া হবে, তার কিছুটা আজকের বৈঠকে স্পষ্ট হতে পারে রাজনৈতিক মহলের অনুমান।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।