ফাইল ছবি
তৃতীয় তৃণমূল সরকারের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করেছেন, এ বার তাঁর লক্ষ্য শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থান। সেই লক্ষ্যে আরও একধাপ এগোলেন তিনি। মঙ্গলবার মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, রাজ্যেই সাইকেল হাব হবে। এ জন্য ৩০ একর জমিও বরাদ্দ হয়েছে খড়্গপুরের বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে। বিনিয়োগ হবে ২০০ কোটি টাকা।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমি অনেক দিন ধরে চেষ্টা করছিলাম। আসানসোলে আগে ছিল। সেটা উঠে গিয়েছে। সেই দুঃখ আমরা ভুলতে পারি না। আমি সবচেয়ে হ্যাপিয়েস্ট পার্সন আজকে।’’ সাইকেলের কারখানা গড়বেন, এমন পাঁচ উদ্যোগপতিও বৈঠকে ছিলেন। তাঁদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, ‘‘আপনারা কারখানা করুন। আপনাদের সব রকম সহযোগিতা আমরা করব।’’
করোনা পরিস্থিতিতে বহু পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যে ফিরে আসেন। তাঁদের কর্মসংস্থানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের অধীনে একাধিক পরিকল্পনা ছিল রাজ্য সরকারের। তার মধ্যে সাইকেল হাব একটি। সবুজসাথী প্রকল্পে নবম-দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের প্রতি বছর সাইকেল দিয়ে থাকে রাজ্য। বছরে গড়ে ১০-১১ লক্ষ সাইকেল কিনতে হয়। সেই সাইকেল আসে ভিন্ রাজ্য থেকে। সরকার তাই চাইছে, সাইকেল এ রাজ্যেই তৈরি হোক। সাইকেল কারখানার সঙ্গে একযোগে গড়ে উঠতে পারে সাইকেলের বিভিন্ন সরঞ্জাম, যন্ত্রাংশ তৈরির একগুচ্ছ অনুসারী শিল্প। এতে কর্মসংস্থানও বাড়বে।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, ‘‘সবুজসাথীতে আমি দশ লক্ষ করে সাইকেল দিই বছরে। কিন্তু সাইকেলের পার্টস বাইরে থেকে আনতে হয়। সাইকেলও বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয়। এখানে যদি সাইকেল তৈরির কারখানা করতে পারি, সেই পরিকল্পনা ছিল।’’ মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জুড়েছেন, ‘‘প্রতি বছর ১০-১১ লক্ষ সাইকেল দিতে ৪০০-৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়। আমাদের রাজ্যের টাকাই বাইরে চলে যেত। এখন এখানে কারখানা হচ্ছে। অনেক কর্মসংস্থান হবে।’’ বরাত পেতে সমস্যা হবে না, উদ্যোগপতিদের স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উদ্যোগপতিরাও জানান, খড়্গপুরে একটা বৃহৎ সাইকেল শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠবে, যেমন লুধিয়ানায়।
এই কারখানা যাতে নির্বিঘ্নে হতে পারে, প্রশাসনের পাশাপাশি নিজের দলের নেতাদেরও সেই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। খড়্গপুর গ্রামীণের বিধায়ক দীনেন রায়কে তাঁর নির্দেশ, ‘‘দীনেন, ওখানে চলে যাবে না চাকরি চাই বলতে। ওঁরা কাকে চাকরি দেবে, সেটা ওঁদের ব্যাপার। তোমরা কেউ কোনও হস্তক্ষেপ করবে না।’’ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, জমি নিয়ে যেন কোনও সমস্যা না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। মমতা বলেন, ‘‘ওখানে মোবাইল-পুলিশ থাকবে। নজর রাখতে হবে।’’