ছবি: রয়টার্স।
তিনি বিধানসভায়। স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছেন। ফোনে জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে এ কথা জানিয়েও স্বস্তি পেলেন না দুবরাজপুরের তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউড়ি।
ততক্ষণে দলের মধ্যে ছড়িয়ে গিয়েছে, তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। তা কানে যেতেই অনুব্রতবাবু ফোনে ধরেন দলীয় বিধায়ককে। উদ্ভ্রান্তের মতো ছুটতে ছুটতে বললেন, ‘‘কী বলি? লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম একটু আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। নানুরের নেতা গদাধর হাজরাও গেছেন। সেই সঙ্গে আমার নামটাও ছড়িয়েছে। সবাই ফোন করছে।’’ জেলা সভাপতি বৃহস্পতিবারই তাঁকে জেলায় ফিরে দেখা করতে বলেছেন। মিনিট দশের মধ্যে এইরকম আরও তিন-চারটি ফোন এল নরেশবাবুর কাছে।
দল ছাড়ার প্রচারে দলীয় বিধায়কদের একাংশে এখন এমনই চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে তৃণমূলে। হাওড়ার গ্রামীণ এলাকা থেকে নির্বাচিত এক তরুণ বিধায়ক তো প্রয়োজন সত্ত্বেও এখন দিল্লি যাওয়া বাতিল করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যবসার কাজে দিল্লি যাওয়া খুব দরকার। কিন্তু যেতে পারছি না। কোথায়, কে বলে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি বলা যায় না।’’ এই প্রচারের ধাক্কায় অসুস্থ এক বিধায়ককে অনভ্যাসের সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের অবস্থান ঘোষণা করতে হয়েছে। দিল্লিতে চিকিৎসার ফাঁকেই লিখেছেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন। এবং থাকবেন। নির্বাচনী প্রচারে রাজ্যে এসে প্রথম দল ভাঙার বিষয়টি আলোচনায় নিয়ে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে তখন রাজনৈতিক ঢঙেই তা উড়িয়ে দিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু ফল প্রকাশের পর-পরই তৃণমূলের দুই বিধায়ক বিজেপিতে যাওয়ায় গুঞ্জন শুরু হয়েছে তৃণমূলেও।
দলের এক বিধায়কের কথায়, ‘‘ফল প্রকাশের পর দলের তরফে বিধায়কদের কাছে সে ভাবে কোনও বার্তা যায়নি। এই ধাক্কার পরে তাঁরা কী করছেন, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই নেতাদেরও। ফলে সংশয়ে রয়েছে সকলেই।’’ গুঞ্জনে নাম জড়িয়েছে নদিয়ার এক বিধায়কেরও। তবে তাঁর দাবি, ‘‘দিল্লিতে আছি ঠিকই। সেটা ব্যক্তিগত কাজে।’’