সাহিত্য উৎসবে শশী তারুর। বুধবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে। নিজস্ব চিত্র
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশ জুড়ে প্রতিবাদের যে-জোয়ার নেমেছে, সেটাকে অবশ্যই দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ বলা যেতে পারে বলে জানিয়ে দিলেন শশী তারুর। বুধবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে এক সাহিত্য উৎসবে একটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘এই প্রথম নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে ধর্মকে মাপকাঠি হিসেবে ধরা হচ্ছে। এটা অবশ্যই দেশের সংবিধানের মূল ভিত্তির বিরোধী।’’
সংসদে সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সঙ্গে এনআরসি বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জির ছাঁকনির যোগ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিষয়টা আরও তেতো করে তুলেছেন বলে মনে করেন শশী। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এ দেশে ৬৫ শতাংশ লোকের জন্মের নথি নেই। দিল্লির মন্ত্রী, প্রাক্তন সেনাকর্তারাও অনেকে জন্মের নথি নিয়ে হিমশিম খান। তা হলে নথি নিয়ে জুলুমে গরিব মুসলিম, গাঁয়ের মানুষ, আদিবাসীরা কী করবেন?’’
এ দেশে ব্রিটিশ উপনিবেশ নিয়ে সাংসদ-লেখক শশীর বহুচর্চিত বই, পলাশির যুদ্ধ নিয়ে সুদীপ চক্রবর্তীর বই প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছিল। প্রশ্নোত্তরের বাঁকে তা ঘুরে গেল আজকের ভারতে গেরুয়াকরণের প্রসঙ্গে। শশীর মতে, এই গেরুয়াকরণ উপনিবেশের উত্তরাধিকারই বহন করছে। তাঁর কথায়, ‘‘প্রাক্-স্বাধীনতা যুগে দেশের লড়াইটাই ছিল ধর্মের ভিত্তিতে ভাগাভাগি নিয়ে। যাঁরা ধর্মীয় পরিচিতিকে গুরুত্ব দিয়েছেন, তাঁরা পাকিস্তান নিয়ে কেটে পড়েছেন। কিন্তু গাঁধী থেকে অম্বেডকর সকলের সমানাধিকার মানতেন। আমাদের সংবিধানে সেটাই বলা আছে। যা এরা ভুলিয়ে দিতে চায়।’’ মানুষকে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করার অপচেষ্টার জন্য তোপ দেগে শশী বলেছেন, ‘‘আসল টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং তো ওই দিল্লিতেই বসে আছে! ওদের সঙ্গে লড়াইটা অবশ্যই আর এক স্বাধীনতার যুদ্ধ।’’
২৯ জানুয়ারি তিরুঅনন্তপুরমে বিবেকানন্দের মূর্তি থেকে গাঁধী-মূর্তি পর্যন্ত পদযাত্রার ডাক দিয়েছেন শশী।