সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। ফাইল চিত্র।
ভারতীয় সমাজে বিভিন্ন মাত্রিক মানুষ আছেন। কিন্তু বিভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও তাঁদের একই অভ্যাসের মধ্যে নিয়ে আসাই সঙ্ঘের লক্ষ্য। সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন উপলক্ষে কলকাতার শহিদ মিনার ময়দানে আরএসএসের ‘নেতাজি লহ প্রণাম’ কর্মসূচিতে এসে এ কথা বললেন সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন, এই কাজ তাঁরা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই করেন। এর জন্য কোনও প্রচার বা জনপ্রিয়তা তাঁদের প্রয়োজন নেই। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের প্রশ্ন, বিজেপি যে ভাবে বার বার নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তি জনপ্রিয়তার আড়ম্বর প্রচার করে থাকে, সঙ্ঘ প্রধান কি সেই বিষয়ে ইঙ্গিত করলেন? আরএসএস প্রধান সোমবার ব্যক্তিস্বার্থ, ব্যক্তি প্রচারের বদলে দেশের স্বার্থ, দেশের অগ্রগতির চিন্তা করার পরামর্শ দেন।
সঙ্ঘের হাওড়া ও কলকাতা মহানগরের হাজার দুয়েক স্বয়ং সেবকের সামনে এ দিন ভাগবত বলেন, সুভাষ, বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথের নির্দেশিত পথেই সঙ্ঘ এগিয়ে চলেছে। ওই কর্মসূচিতে সঙ্ঘের পরিচিত সাদা জামা ও খাকি প্যান্টে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ বিজেপির শীর্ষ নেতারা। যদিও তাঁরা কেউ মঞ্চে ওঠেননি।
ভাগবত বলেন, “ভারতের বৈভব পৃথিবীর শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সামাজিক সমতার মধ্যেই আছে। এটাই সুভাষবাবুর লক্ষ্য ছিল। আমরা সেই কাজই করছি।” তাঁর সংযোজন, “আমরা আগে ভারত মাতাকে প্রণাম করি, তার পরে ঈশ্বরকে। আমাদের কাছে আগে দেশ, পরে ব্যক্তি। এই ভাবনা নিয়ে চললে তবেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। নেতাজি তরুণের স্বপ্নে বলেছিলেন, দেশের পরাধীনতার পরে এই ভাবনাই দেশের মানুষের মধ্যে হারিয়ে গিয়েছিল। আজ সেই পুরনো ভাবনা ফিরে এসেছে। তাই গোটা বিশ্ব ভারতের দিকে তাকিয়ে আছে।” তাঁর দাবি, নেতাজি, রবীন্দ্রনাথের পথেই সঙ্ঘ চলে। স্বামী বিবেকানন্দ যা বলে গিয়েছেন, তার প্রবহমানতা নিয়ে আরএসএস চলছে।
ভাগবত বক্তৃতায় বলেন, “যে যেখানেই কাজ করছেন, সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। ব্যক্তির স্বার্থে নয়, দেশের স্বার্থে কাজ করাই লক্ষ্য।” তিনি বলেন, “অনেকে প্রশ্ন করেন, আমরা খালি শরীরচর্চা কেন করি? আমার রাজনীতি করতে আসিনি। সঙ্ঘের নাম থাকার দরকার নেই কিন্তু অভ্যাস এক হওয়া দরকার। আমরা নির্বাচন জিততে আসিনি, আমাদের জনপ্রিয়তা চাইনা। আমরা এটাই করছি, এটাই করতে থাকব।”