বাঘ-বন্দির প্রস্তুতি বন দফতরের। নিজস্ব চিত্র।
বড়দিনের ছুটিতে বেড়াতে এসেছিলেন বেশ কিছু পর্যটক। ছিল ‘পিকনিক পার্টি’র ভিড়ও। অথচ বাঘের গর্জন শুনে বন্ধ করে দেওয়া হল পিকিনিক স্পট! কুলতলির পিয়ালি নদীর চরে কেল্লা পিকনিক স্পটে শনিবার সকালের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বাঘের গর্জন প্রথমে শুনতে একটি লঞ্চের পর্যটকেরা। তাঁরাই বন দফতরে খবর দেন। এর পরে পুলিশ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা বিভাগের বনকর্মীরা এসে পর্যটকদের সরিয়ে দেন। সেই সঙ্গে কেল্লা পিকনিক স্পট এলাকায় শুরু হয় বাঘের খোঁজ। যদিও শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সে বাঘের দেখা মেলেনি।
গত বছর করোনার কারণে তেমন ভাবে পর্যটকরা আসতে পারেননি সুন্দরবনে। কিন্তু এ বছর বড় দিনের ছুটিতে বহু পর্যটকরা সুন্দরবনের জনপ্রিয় পর্যটনক্ষেত্র পিয়ালিতে এসেছিলেন। এই রকমই একটি পর্যটকদের লঞ্চ মাতলা ধরে পিয়ালির দিকে যাচ্ছিল। সে সময় পিকনিক স্পট লাগোয়া এলাকা থেকে বাঘের গর্জন শুনতে পান যাত্রীরা। থামিয়ে দেওয়া হয় লঞ্চ। দ্রুত বনকর্মীরা এসে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ করে দেন। পর্যটকদের যেতে বলেন কৈখালির মাতলার চরে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) মিলন মণ্ডল বলেন, ‘‘লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ার অভিযোগ পাওয়ার পরই দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বনবিভাগের তরফে। পুরো এলাকা জাল দিয়ে ঘিরে ফেলার পাশাপাশি দু’টি খাঁচা পাতা হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সকালে কুলতলির ঢোড়াবাগদা এলাকায় একটি বাঘ ঢুকে পড়েছিল বলে গ্রামবাসীদের দাবি। তবে পায়ের ছাপ পাওয়া গেলেও বাঘের দেখা মেলেনি। বন দফতরের পক্ষ থেকে গোটা এলাকা জাল দিয়ে ঘিরেও বাঘকে ধরা যায়নি। সে জোয়ারে সময় ভেসে অন্য চরে উঠে ফের গা ঢাকা দেয় বলে বন দফতরের অনুমান। সেই সেই বাঘটিই কেল্লা পিকনিক স্পটের কাছে আশ্রয় নিয়েছে বলে বনকর্মীদের একাংশ মনে করছেন।
শনিবার বিকেল পর্যন্ত পিয়ালি পিকনিক স্পট লাগোয়া গোটা এলাকা জাল দিয়ে ঘেরা হয়েছে। বসানো হয়েছে খাঁচা। তবে বাঘটি একটি নির্দিষ্ট এলাকায় না থেকে জনবসতি লাগোয়া বাদাবনে ঘুরতে থাকায় তার অবস্থান নির্দিষ্ট করে চিহ্নিত করতে সমস্যায় পড়তে হয় বলে বন দফতর সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, গত ৭ ডিসেম্বর সকালে সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে কুলতলি ব্লকের মৈপীঠের ভূবনেশ্বরী গ্রামে ঢুকে পড়েছিল একটি বাঘ। খাঁচা পেতে সেটিকে ধরে ধূলিভাসানি লাগোয়া জঙ্গলে ছেড়ে দেয় বন দফতর।