বর্ধমানের পথে এ বার কাঁটা দিল আলিমুদ্দিন

সংগঠনে এ বার রদবদলের সময়ে বর্ধমানের অমল হালদারের নাম দলের একাংশ থেকে প্রস্তাব করা হলেও রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে তাঁর জায়গা হয়নি।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৪২
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক সময়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে ছড়ি ঘোরাত সিপিএমের বর্ধমান লবি। সেই আলিমুদ্দিনের সঙ্গেই বিবাদে জড়িয়ে দলে এখন কোণঠাসা হয়ে পড়ল পুরনো বর্ধমান শিবির।

Advertisement

সংগঠনে এ বার রদবদলের সময়ে বর্ধমানের অমল হালদারের নাম দলের একাংশ থেকে প্রস্তাব করা হলেও রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে তাঁর জায়গা হয়নি। নৃপেন চৌধুরী সরে যাওয়ায় কৃষক সভার রাজ্য সম্পাদক অমলবাবুকে ওই ফ্রন্টের প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীকে নেওয়া হোক, এই যুক্তি মানেনি আলিমুদ্দিন। বরং, পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে কৃষক সভার নেতা সৈয়দ হোসেনকে রাজ্য কমিটির নতুন সদস্য করা হয়েছে। যিনি অমলবাবুর শিবিরের বাইরের লোক বলেই জেলা রাজনীতিতে পরিচিত। আবার পশ্চিম বর্ধমান থেকে প্রাক্তন ছাত্র-নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায় রাজ্য কমিটিতে স্থান না পাওয়ার পরে সংগঠনের কাজ থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে। এক কালের শক্ত ঘাঁটি বর্ধমানের এই সমীকরণ নিয়ে এখন জোর চর্চা সিপিএমের অন্দরে!

দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির উপস্থিতিতে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বিগত বৈঠকে পূর্ব বর্ধমানের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক প্রশ্ন তুলেছিলেন বামেদের কংগ্রেস-সঙ্গ নিয়ে। গাঁধীজির দেড়শো বছর পূর্তিতে একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে গোটা বামফ্রন্টের নেতারা কেন প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে গিয়ে বৈঠক করেছেন, সেই প্রশ্নও ছিল তাঁর। দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এ বারও অচিন্ত্যবাবুদের জেলার এমন আপত্তি নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তিন বছর ধরেই কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার লাইনে আপত্তি তুলে যাচ্ছে পূর্ব বর্ধমান। সূর্যবাবুরাও এ বার আর ওই জেলার সঙ্গে সমঝোতায় যেতে চাননি! দলের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, অচিন্ত্যবাবুর পরে জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি উদয় সরকারকে পূর্ব বর্ধমানের জেলা সম্পাদক করার পরিকল্পনা আছে জেলা নেতৃত্বের। কিন্তু উদয়বাবুর বদলে সৈয়দকে রাজ্য কমিটিতে এনে সম্মেলনের আগেই সেই ঘুঁটি ঘেঁটে দেওয়ার চেষ্টা করল আলিমুদ্দিন!

Advertisement

পশ্চিম বর্ধমানের ছবি অবশ্য আলাদা। ছাত্র সংগঠনে এক সময়ে ‘জনপ্রিয়’ নেতা হলেও পার্থবাবু এখনও রাজ্য কমিটিতে আসতে পারেননি— এই নিয়ে আক্ষেপ আছে দলের অনেকেরই। এ বার রাজ্য কমিটিতে দুই নেতা তাঁর নাম প্রস্তাব করার পরেও লাভ হয়নি। তার পরে পার্থবাবু সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছেন, ‘সময় ফুরিয়ে আসছে। তবে একটা কথা, আদর্শের জন্য সব ত্যাগ করা যায়, কোনও কিছুর বিনিময়ে আদর্শ নয়... কোনও পদ ত্যাগের অর্থ অবশ্য আদর্শ ত্যাগ নয়’। কেউ প্রশ্ন করলে তিনি অবশ্য বলছেন, এর সঙ্গে দলীয় ঘটনাপ্রবাহের সম্পর্ক নেই। কিন্তু জলঘোলা যা হওয়ার, হচ্ছে।

আভাস রায়চৌধুরীর পাশাপাশি দুই বর্ধমানের দায়িত্বে এখন সূর্যবাবু নিজেই। দলের একটি সূত্রের বক্তব্য, পূর্ব বর্ধমানের বড় কোনও কর্মসূচিতে সূর্যবাবু বা পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীকে পারতপক্ষে ডাকাই হয় না। তাদের মতে, সম্মেলনের আগে এই টানাপড়েন আরও বাড়বে। তবে দলের এক রাজ্য নেতার বক্তব্য, ‘‘সিদ্ধান্ত যা হয়েছে, দলে আলোচনা করেই। রদবদলের আগের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে তুলনা করলে একটা জায়গা ফাঁকা আছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement