ভোটের সকাল থেকেই যুযুধান দুই শিবিরের অভিযোগ ছিল বহিরাগত জমায়েত নিয়ে। নির্মল শিবিরের দাবি, বিরোধী পক্ষ মেদিনীপুর থেকে লোক এনেছে। প্রশান্ত শিবিরের অভিযোগ, প্রতিদ্বন্দ্বী শিবির লোক এনেছে আমতা থেকে। শনিবার রাতে নির্মল শিবির জানায়, সশস্ত্র বহিরাগতেরা ভোট কেন্দ্রের গলিতে জড়ো হয়েছে।
প্রতীকী চিত্র।
লোকসভা, বিধানসভা, এমনকি পাড়ার পুরভোটে দেদার ছাপ্পা ভোট-সহ ব্যাপক গোলমালের সাক্ষী এই বাংলা। তারই প্রতিচ্ছবি দেখা গেল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর কলকাতা শাখার নির্বাচনে। উঠল ছাপ্পা ভোট, মারামারি, বহিরাগতদের জমায়েতের মতো অশান্তির অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগ। সেবাব্রতে দীক্ষিত চিকিৎসকদের ভোটেও যে এমনটা ঘটতে পারে, সমাজের প্রায় সব স্তরের মানুষের কাছেই তা অবিশ্বাস্য ঠেকছে। তাঁদের প্রশ্ন, এটা হবে কেন?
ভোট শুরু হয় শনিবার সকালে। সারা রাত চলে গণনা। ভোটদানের সময়ের মতো রাতেও ছিল উত্তেজনা। রবিবার সকালে ফলপ্রকাশের পরে দেখা যায়, সভাপতির যে-পদ নিয়ে আসল লড়াই, তাতে জিতেছেন তৃণমূলের বিধায়ক-চিকিৎসক নির্মল মাজি। প্রতিদ্বন্দ্বী চিকিৎসক প্রশান্ত ভট্টাচার্যকে নয় ভোটে হারিয়েছেন তিনি। মোট ২৭টি পদের মধ্যে অধিকাংশ পদেই জয়ী নির্মল শিবির। তৃণমূলের সাংসদ-চিকিৎসক শান্তনু সেনের ঘনিষ্ঠ প্রশান্ত শিবিরের অনির্বাণ দলুই কোষাধ্যক্ষ এবং অমিতাভ দত্ত সহ-সম্পাদক পদে জিতেছেন। ৩৬৬টি ভোট পড়েছিল। পাঁচটি বাতিল হওয়ায় ১৩ রাউন্ডে গোনা হয় ৩৬১টি ব্যালট।
ভোটের সকাল থেকেই যুযুধান দুই শিবিরের অভিযোগ ছিল বহিরাগত জমায়েত নিয়ে। নির্মল শিবিরের দাবি, বিরোধী পক্ষ মেদিনীপুর থেকে লোক এনেছে। প্রশান্ত শিবিরের অভিযোগ, প্রতিদ্বন্দ্বী শিবির লোক এনেছে আমতা থেকে। শনিবার রাতে নির্মল শিবির জানায়, সশস্ত্র বহিরাগতেরা ভোট কেন্দ্রের গলিতে জড়ো হয়েছে। যদিও পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে তেমন কাউকে পায়নি। এ দিন ফল ঘোষণার পরে নির্মলবাবু বলেন, “আইএমএ-র বঙ্গীয় শাখায় চার
বার সভাপতি ছিলাম। কলকাতা শাখাতেও এই নিয়ে চার বার সভাপতি হলাম। এ বার ভিতরে মুর্শিদাবাদ, মালদহ থেকে আনা বহিরাগতদের ঢুকিয়ে ভোট লুটের চেষ্টা করেছিল বিজেপি। আমার উপরেও হামলা হয়, ডান কাঁধে চোট লেগেছে।” তবে প্রশান্তবাবু বলেন, ‘‘আমরা কোনও বহিরাগতকে আনিনি। বরং বিরোধীরা অনেক ভুয়ো ভোট ফেলেছে। প্রতি বারেই নির্মল মাজি ৫-৭ ভোটে জিতে যান। এটা আমাদের নৈতিক জয়। পিছিয়ে পড়ছি বলে মনে হয় না।’’ চিকিৎসক নয়, এমন লোকজনকে ভোটার সাজিয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল বলে অভিযোগ প্রশান্ত শিবিরের অনির্বাণবাবুর। তবে নির্মল শিবিরের পক্ষে দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূলের সহ-সভাপতি কৌশিক বিশ্বাসের দাবি, সকলেই নিজের ভোট দিয়েছেন। তারই ফল বেরিয়েছে। গোলমাল করেছেন বিরোধীরা।
নির্মলবাবুর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘নির্মল মাজি ও শান্তনু সেনের সম্পর্ক সকলে জানেন। আমাদের দলের তরফে কেউ ভোটে যোগ দেননি।’’