কণ্ঠসঙ্গীতে প্রথম রিদম মান্না, কণ্ঠসঙ্গীতে দ্বিতীয় বর্ণালী সামন্ত ও কণ্ঠসঙ্গীতে তৃতীয় শ্রীতমা গুপ্ত ।
‘ছন্দ’ বিষয়টা ছিল তাঁর নামের মধ্যেই। সেই সুর-তাল-ছন্দের মেলবন্ধনেই মঞ্চে তিনি মেলে ধরলেন সুপ্ত প্রতিভাকে। ‘পি সি চন্দ্র মুগ্ধা নিবেদিত আনন্দবাজার পত্রিকা অদ্বিতীয়া’-র মেদিনীপুর আঞ্চলিক-পর্বের কণ্ঠসঙ্গীত বিভাগে প্রথম হয়েছেন রিদম মান্না। একই বিভাগে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হয়েছেন যথাক্রমে বর্ণালী সামন্ত এবং শ্রীতমা গুপ্ত রাই।
মঞ্চে উঠে পুরস্কার হাতে পেয়ে খুশি রিদিম, বর্ণালী, শ্রীতমারা। রিদিমরা বলছেন, ‘‘এই মঞ্চে যেন নতুন করে নিজেকে খুঁজে পেলাম। ভাল লাগছে!’’ গত শনিবার মেদিনীপুর শহরের প্রদ্যোত স্মৃতি সদনে আয়োজিত হয়েছিল ‘অদ্বিতীয়া’-র মেদিনীপুর আঞ্চলিক-পর্বের প্রতিযোগিতা। কণ্ঠসঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি— এই তিনটি বিভাগে মেদিনীপুর অঞ্চলের সেরারা নির্বাচিত হয়েছেন এই প্রতিযোগিতা থেকে। সফলরা কলকাতায় প্রতিযোগিতার মূলপর্বে অংশগ্রহণ করবেন। ‘অদ্বিতীয়া’ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুকদের এক মিনিটের পারফরম্যান্সের ভিডিয়ো পাঠাতে হয়েছিল। সেখান থেকেই প্রতিটি বিভাগের ২৫ জনকে বাছাই করা হয়। তাঁদের নিয়েই আয়োজিত হয় মেদিনীপুর আঞ্চলিক-পর্বের প্রতিযোগিতা।
গৃহবধূ রিদিম মান্না থাকেন মেদিনীপুর শহরের নজরগঞ্জে। তাঁর ১১ মাসের মেয়েও রয়েছে। ছোটবেলায় নিয়মিত গানের চর্চা করতেন। কিন্তু বিয়ের পর সংসারের দেখভাল করতে গিয়ে গান থেকে দূরে সরে এসেছিলেন। ফলে নতুন করে গানের প্রতিযোগিতার মঞ্চে নামা নিয়ে খানিকটা সংশয়েই ছিলেন রিদিম। বিজ্ঞাপন দেখে একপ্রকার জেদ করেই এক মিনিটের ভিডিয়ো করে পাঠিয়েছিলেন। তাতেই মিলেছিল সুযোগ। রিদিমের কথায়, ‘‘প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে ভাল লাগছে। নাম দেওয়ার সময়ও ভাবিনি প্রথম হতে পারব!’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আনন্দবাজার পত্রিকার ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপনটা দেখেছিলাম। বিজ্ঞাপনটা দেখে জেদ চেপে বসেছিল। গানের এক মিনিটের একটা ভিডিয়ো করে পাঠিয়েছিলাম। পরে আমাকে জানানো হয়, আঞ্চলিক-পর্বের জন্য আমাকেও বাছাই করা হয়েছে। আঞ্চলিক-পর্বের প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়ার পর, এ বার কলকাতায় মূলপর্বের প্রতিযোগিতায় যেতে হবে।’’ প্রতিযোগিতায় সাফল্যের পর সঙ্গীত চর্চাকে ফের নতুন করে শুরু করার পরিকল্পনা করছেন রিদিম।
‘অদ্বিতীয়া’য় দ্বিতীয় স্থানাধিকারী বর্ণালীও গৃহবধূ। বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটে। বর্ণালী বলছিলেন, ‘‘ছোটবেলায় গানের চর্চা করতাম। পরে সংসারের কাজের চাপে আর গানের চর্চা করা হয়নি।’’ তিনি জানান, তাঁর শ্বশুরবাড়ির সকলেরই গান-বাজনায় আগ্রহ রয়েছে। তাঁদের উৎসাহেই ফের গানের চর্চা শুরু করেছেন বর্ণালী। বর্ণালীর এক মেয়ে, অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। বর্ণালীর কথায়, ‘‘এমন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পেরে ভাল লেগেছে।’’ প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থানাধিকারী শ্রীতমাও গৃহবধূ। বাড়ি খড়্গপুর শহরে। শ্রীতমা বলছিলেন, ‘‘এই প্রথম এমন কোনও প্রতিযোগিতায় অংশ নিলাম। প্রথমবার অংশ নিয়েই পুরস্কৃত হলাম।’’ দু’বছরের পুত্রসন্তান রয়েছে শ্রীতমার। তাঁর কথায়, ‘‘আনন্দবাজারের ফেসবুক পেজটা দেখছিলাম। হঠাৎই বিজ্ঞাপনটা চোখে পড়ে যায়। এক মিনিটের ভিডিয়ো করে পাঠিয়েছিলাম। তাতেই পারফর্ম করার সুযোগ মেলে।’’ উচ্ছ্বসিত শ্রীতমার কথায়, ‘‘গানের প্রতি ভীষণ ভাললাগা রয়েছে। সেই ভাললাগা থেকেই প্রতিযোগিতায় নাম দেওয়া।’’ মেদিনীপুর আঞ্চলিক-পর্বে প্রথম স্থানাধিকারী রিদিমও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘গানই আমার প্রাণ! তাই এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা।’’