Uniform Civil Code

অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিরুদ্ধে আসতে পারে প্রস্তাব, জল্পনা রাজ্য বিধানসভার অন্দরে

৩১ জুলাই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মণিপুর নিয়ে নিন্দাপ্রস্তাব এনেছিল তৃণমূল। সেই প্রস্তাবের পক্ষে বক্তৃতা করে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৩ ১২:১৮
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ ।

অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব আনার কথা কেরল সরকারের। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন স্বয়ং এই প্রস্তাবটি বিধানসভায় পেশ করতে পারেন বলেই প্রাথমিক খবর। সেই সূত্রে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অন্দরেও জল্পনা শুরু হয়েছে এই মর্মে যে, বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে এই ধরনের প্রস্তাব আনতে পারে রাজ্যের শাসক তৃণমূল।

Advertisement

২০১৪ সালে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই লাগাতার সংঘাত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক নীতির সমালোচনা করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের এনআরসি-সিএএ থেকে শুরু করে তিনটি কৃষিবিলের বিরোধিতায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিরোধী প্রস্তাব পাশ করিয়েছিলেন তিনি। সাম্প্রতিক সংযোজন, মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় আলোচনা। গত ৩১ জুলাই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মণিপুর নিয়ে নিন্দা প্রস্তাব এনেছিল শাসকদল। সেই প্রস্তাবের পক্ষে বক্তৃতা করে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাই বিধানসভার অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে— বিধানসভার বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি সংক্রান্ত বিরোধী প্রস্তাব আনা হতে পারে। ওই অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা আগামী ২২ অগস্ট।

অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে নিজেদের অবস্থান আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে বাংলার শাসক তৃণমূল। জাতীয় স্তর তথা সংসদে এই বিল পেশ করা হলে তারা যে কেন্দ্রীয় সরকারের সেই নীতির বিরোধিতা করবে, তা প্রকাশ্যেই ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে কয়েক মাস আগে সংসদের দুই কক্ষে যে ভাবে দিল্লি অধ্যাদেশ পাশ করিয়েছে মোদী সরকার, তাতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অনুমান, আগামী শীতকালীন অধিবেশনে কেন্দ্র অভিন্ন দেওয়ানি বিধি পাশ করানোর মরিয়া চেষ্টা করবে। কারণ, বেশ কয়েক মাস ধরেই কেন্দ্রীয় সরকার তথা গেরুয়া শিবির অভিন্ন দেওয়ানির বৃদ্ধির প্রসঙ্গ তুলে ধরেছে জনসমক্ষে। অনেকে মনে করছেন, ওই আইন লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির ‘ভোট মেরুকরণ’-এর অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে। তাই পাল্টা বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ তার বিরোধিতা করতে সুর চড়াবে। সেই সূত্রেই কেরলের এলডিএফ সরকার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিরোধী প্রস্তাব আনছে তাদের বিধানসভায়।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ‘ইন্ডিয়া’-র অন্যতম শরিক। তাঁর দল ঘোষিত ভাবেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিরুদ্ধে। তাই বিধানসভার আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন, বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এই সংক্রান্ত নিন্দাপ্রস্তাব এলে বিস্মিত হওয়ার কোনও কারণ থাকবে না। বিধানসভার ওই অধিবেশনে বেশ কয়েকটি বিল পাশ হওয়ার কথা। তার সঙ্গে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনার অবকাশ রয়েছে। বিজেপি যেমন এই আইনটি সংসদে পেশ করে নিজেদের ভোট ব্যাঙ্ককে ‘তুষ্ট’ করতে চাইছে, তেমনই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ওই বিলের পাল্টা প্রস্তাব এনে মুখ্যমন্ত্রী মমতাও নিজের ভোটারদের কাছে বিজেপি বিরোধী ‘বার্তা’ দিতে চাইতে পারেন। মঙ্গলবার ওই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগামী ২২ তারিখে বিধানসভার অধিবেশন আবার শুরু হবে। সেই সময়ে এই বিষয়ে কিছু জানাতে পারব।’’ উল্লেখ্য, বিধানসভায় অধিবেশন শুরুর আগে ‘বিজ়নেস অ্যাডভাইসরি কমিটি’র বৈঠক হয়। সেখানেই ঠিক হয়, বিধানসভার অধিবেশনে কী কী বিল বা প্রস্তাব আনা হবে। বিধানসভায় ওই বৈঠক বসলেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিরোধী প্রস্তাব আনা হবে কি না, তা জানা যেতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement